প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতিকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ আইনজীবীরা। তারা জানান, আজকেই বিতর্কিত ও দলবাজ এই বিচারপতিদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের শুরুতে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ নিহতদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে গ্রহণ করেছিল এবং তার উপর জনগণ আস্থা রেখেছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাস ভবন, বিচারপতি ভবন জনরোষানলের শিকার হন। এছাড়া গত ১৫ দিন ধরে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সারা দেশের আদালত ভবন জনগণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, যা গত ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি। বরং খুনি, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা সরকারের সমস্ত অন্যায় পাপের সহযোগী হয়েছে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ গত ১৫ বছরের দলবাজ বিচারপতিদের। আইনজীবী সমাজ এই সমস্ত সংবিধান লঙ্ঘনকারী প্রধান বিচারপতিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আদালতে বিচার করতে হবে। এ সময় ‘রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়’ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এ উক্তির কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। রিট শুনতে অস্বীকৃতি জানানোয় বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেন। পাশাপাশি সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ যোগ্য ব্যক্তিদের বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার দাবি করেন। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শেখ ফজলে নুর তাপস, সদ্য পদত্যাগকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানসহ ১২ আইনজীবীকে সামাজিকভাবে বয়কট ও অসহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিচার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসীন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রমুখ।