১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের যে লক্ষ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার, তা গত ৫০ বছরেও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জাতির সামনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ১৫ প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির কার্যালয়ে এই প্রত্যাশার কথা জানান পরিকল্পনারবিদরা। তাদের প্রত্যাশাগুলো হচ্ছে— সর্বাগ্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা হ্রাস করে বিচার বিভাগ, সংসদ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা করা, দেশের সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান যেমন বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন প্রভৃতিকে সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। এছাড়াও তারা আরো প্রত্যাশা রাখেন দেশের সব এলাকার জন্য নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা, সব স্তরের নীতি, পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন কর্মসূচি হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবকাঠামোসহ ভৌত ও স্থানিক (নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পর্যায়ে) উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজন ও ন্যায্যতা অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কাঠামো ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা, দেশের জন্য একটি যুগোপযোগী ‘নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পরিকল্পনা আইন’ এবং ‘জাতীয় নগর উন্নয়ন নীতিমালা’ প্রণয়ন করা, ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন ধারণার বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের আঞ্চলিক পর্যায়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করবার পরিকাঠামো ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা, যে কোনো পর্যায়ের পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়ন কর্মসূচিতে পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং প্রয়োজনীয় বিকেন্দ্রীকরণ করা, দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো ও বিদ্যমান অর্থনৈতিক-সামাজিক পরিকল্পনাগুলোর সফল বাস্তবায়নের স্বার্থে স্থানিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নকে অত্যাবশ্যক করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করা।