ঢাকায় ফিরছে কর্মচাঞ্চল্য

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে কর্মচাঞ্চল্য স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়, সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত খোলা থাকায় টানা কয়েক দিন মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

গত জুলাই মাসজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়, এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসায় দেশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

কোটা আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ নজিরবিহীন সহিংসতা, কারফিউ এবং সাধারণ ছুটিতে অচলাবস্থা শুরু হয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে ভয় আর আতঙ্কের পরিবেশ অনেকটা কাটিয়ে স্বাভাবিক রূপে ফিরেছে মানুষ। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক, বিমা, দোকানপাট খুলে দেয়ায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বেড়েছে।

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সড়কে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যদের টহল রয়েছে। গত কয়েকদিন যেখানে সুনসান নীরবতায় আচ্ছন্ন ছিল, সেসব এলাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে। অফিস খোলার প্রথম দিন সকাল থেকেই সড়কে বাড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি। জীবন-জীবিকার টানে ঘরবন্দি জীবন ছেড়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হন মানুষ। সড়কে বাড়ে যানবাহনের সংখ্যাও। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতেও যানজট দেখা যায়। যানজটে ভোগান্তিতে অফিসগামী মানুষ।

কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর বাসা থেকে বের হতে পেরে স্বস্তির কথা জানিয়ে বেসরকারি চাকরিজীবী কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েক দিনের বন্ধে হাঁপিয়ে উঠেছি। কয়েক দিন পর অফিস করতে বের হয়েছি।

মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকায় সড়কে যানজট বেড়েছে। রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে দেখা যায় যানবাহন। মিরপুর, আগারগাঁও, মহাখালী, কাকরাইল, মালিবাগ, রামপুরা, পল্টন, তোপখানা রোডে রিকশা, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত বাহনের পাশাপাশি কিছু গণপরিবহনও চলতে দেখা গেছে। রাস্তায় নামা যাত্রীরা বলছেন, একদিকে বন্ধ মেট্রোরেল, অন্যদিকে বন্ধ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। তার মধ্যে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করার কারণে সড়কে প্রচণ্ড যানজট দেখা যায়। গণপরিবহনের অভাবে মূল সড়কেও দেখা যায় রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার আধিক্য।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল কাউন্টারের কর্মচারী মোহাম্মদ কাওসার জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনার বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে বাস ছেড়ে গেছে। কাউন্টার মাস্টার মো. সোহরাব জানান, গতকাল বাস বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে। যাত্রীদের চাপ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কয়েক দিন ফাঁকা থাকার পর ঢাকার মিরপুর, আগারগাঁও, মহাখালী এলাকার সড়কে যান চলাচল বেড়েছে। বনানী, মহাখালী, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, ধানমন্ডি সাত মসজিদ সড়কে বেশ কিছু বাস চলতে দেখা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে ব্যক্তিগত যানবাহন। সেইসঙ্গে অনেকে রিকশা, লেগুনা, মোটরসাইকেলে বের হওয়ায় সড়কে যানবাহনের আধিক্য দেখা যায়।

মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার সৌমি ইমতিয়াজ বলেন, সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে।