ট্রেজারার নেতৃত্বে হল পুনরুদ্ধারে জবির শিক্ষার্থীরা
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সাজেদুর রহমান, জবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া ১১টি হলকে দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জবি শিক্ষার্থীরা। ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে চলবে হল পুনরুদ্ধার অভিযান। সাথে ধূপখোলা মাঠকেও নিজেদের দখলে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয় নুর নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ছাড়াও তিনি আরো বলেন, ট্রেজারার মহোদয় তিনি তার স্বপদে বহাল থাকবেন। তার নেতৃত্বে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হল আন্দোলন শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আন্দোলনের আহ্বান জানান তিনি। আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা ট্রেজারার মহোদয় মেনে নেবেন। এরই মধ্যে তিনি আমাদের ১৩ দফা শুনেছেন। মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগে গতকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সেখানে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ১৩ দফা দাবিগুলো হলো :
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরসহ সম্পূর্ণ প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট ও ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের প্রধান এবং রেজিস্ট্রারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ক্যম্পাসের ভেতরে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। (ক্যাম্পাসের বাইরে তার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। এটা যে কারো ব্যক্তি গত ব্যাপার। কিন্তু, ক্যাম্পাসের ভেতরে সবাই সাধারণ ছাত্র।)
৩. শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সার্বিক খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৪. আগে ছাত্রলীগের পদধারী ছিল এবং এর উপর ভিত্তি করে ক্যাম্পাসে চাকরি পেয়েছে তারা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকসহ যারা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতার সঙ্গে সম্পৃক্ত, শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঠাট্টা টিটকারি করেছে, তাদের আগামী ২ দিনের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যহতি নিতে হবে।
৫. আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে জকসুর নীতিমালা প্রণয়ন করে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. দখল হলগুলো অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে এবং মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ দ্রুত বাস্তবায়ন কি করতে হবে। (সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।)
৮. শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে ক্যম্পাসের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৯. ক্যাফেটেরিয়ার জন্য বাজেট বরাদ্দ রেখে খাবারের মান উন্নত করতে হবে এবং অতি শিগগিরই নতুন ক্যাফেটরে নির্মাণের কাজসম্পন্ন করতে হবে।
১০. নারী শিক্ষার্থীদের কমন রুমের মান উন্নত করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
১১. ক্যাম্পাসের আশপাশে চাঁদাবাজি, রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. পোষ্য কোটা বাতিল এবং রাজনৈতিক নিয়োগ-বাণিজ্য আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
১৩. গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বাতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে হবে।