যশোরের কেশবপুরে সোনালি আঁশ পাট চাষে ভালো ফলন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো বৃষ্টির কারণে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর পানির অভাবে সঠিক সময়ে কৃষকরা জাগ দিতে না পারায় এবার লক্ষ্যমাত্রার থেকে ১৮২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ কম হয়েছে। তবে পাটের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কিরণময় সরকার বলেন, কেশবপুরে চলতি বছর ৪ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ১০০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ২৫০ মেঃ টন। গত বছর এ উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এ বছর ১৮২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ কম হয়েছে। এবার জেআরও ৫২০ জাতের ৪ হাজার ৯০১ হেক্টর, রবি-১ জাতের ১২ হেক্টর ও দেশি গুটি জাতের ৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে মজিদপুর, ত্রিমোহিনী, সাতবাড়িয়া, মঙ্গলকোট, হাসানপুর, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। এবার বৃষ্টি হওয়ায় বিল খালে পানি আটকে যাওয়ার কারণে এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় খেত থেকে পাট কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় খাল বিলে পানি আটকে যাওয়ায় পাট জাগ দিতে পারছেন কৃষকরা। উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা গ্রামের কৃষক ওলিয়ার রহমান জানান, ‘গত বছর বাজারে পাটের দাম বেশি দেখে এবার ৫ বিঘা ১৫ কাটা জমিতে বীজ বুনেছিলাম। ভালো ফলন হওয়ায় খেতে বিঘা প্রতি ১৭ থেকে ১৮ মণ পাট হতে পারে বলে আশা করছি। গত সোমবার সকাল থেকে খেতের পাট কাটা শুরু করেছি। পাট আবাদ করতে এ পর্যন্ত মোট ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারলে ভালোই লাভবান হবেন বলে জানান। তবে এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে খাল-বিলে পানি আটকায় পাট জাগ দিতে কষ্ট হয়নি বলেও তিনি জানান। একই গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম মন্টু বলেন, ইউরিয়া ১২ টাকা ছাড়িয়ে ২৮ টাকা, পটাশ ১৪ টাকা থেকে ২২ টাকা, ড্যাব ১৬ টাকা থেকে ২২ টাকাসহ সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে অনেক বেশি। পাটের দাম ৩ হাজার টাকা না হলে লোকসান হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বীথি বলেন, এ বছর ৪ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর পাটের বাজারমূল্য কম পাওয়ায় এ উপজেলার চাষিরা পাট আবাদে বেশি আগ্রহ করেননি কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো বৃষ্টির কারণে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবার আশা করছি কৃষকরা পাট বিক্রি করে ভালো দাম পাবেন।