ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শাহবাগে ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচি পালন শিক্ষার্থীদের

শাহবাগে ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচি পালন শিক্ষার্থীদের

‘প্রতিবিপ্লব’ ঠেকাতে রাজধানীর শাহবাগে দিনব্যাপী ‘সর্বাত্মক অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারসহ ৪ দফা দাবিতে সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’-এর অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১১টা থেকে শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে স্লোগান দিতে থাকেন। তাছাড়া, মহানগর নাট্যগোষ্ঠীর পরিবেশনায় গান, কবিতা ও নাটক মঞ্চায়ন করা হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হৈ হৈ রৈ রৈ, হাসিনা/সন্ত্রাসীরা গেলি কই?; জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে; লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে; ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই, হাসিনার ফাঁসি চাই; আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিব না; সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাধ্যমে নির্বাচনের আয়োজনে চাপ দেয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। ফ্যাসিবাদীদের আগে বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন- এরপর জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে, তারা এদেশে রাজনীতি করতে পারবে কি না।

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমন্বয়ক এইচ এম মঈন বলেন, আজ স্বাধীন দেশে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের জীবন যাক কিন্তু নতুন প্রজন্মের রক্ত যেনো না ঝরে। নতুন প্রজন্ম যেন শান্তিতে বসবাস করে সেটা নিশ্চিত করতে চাই।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও সেখান থেকে ষড়যন্ত্র মঞ্চস্থ করার পাঁয়তারা করছে। তাছাড়া তাদের সন্ত্রাসী সন্তানদের দেশে লেলিয়ে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে বিনীত আবেদন করছি এই খুনি হাসিনাকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে ফাঁসির কাষ্ঠে দাঁড় করাতে হবে। তাছাড়া ছাত্র-জনতাণ্ডসেনাবাহিনীর উপর হামলায় জড়িত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের সন্ত্রাসীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আপনারা যদি তা না করতে পারেন ছাত্র-জনতা আবার স্বাধীনতার ডাক দিবে।

আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, অতীতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকেও ভারতীয় মিডিয়া সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রকাশ করছে। গণমানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা মোদির মাধ্যমে নির্বাচন করতে চায়। দেশকে বির্তকিত করার জন্যই এগুলো করা হচ্ছে বলে দাবি করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ৪ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

শিক্ষার্থীদের চার দাবি হলো- ১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে; ২. সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী লীগ ও চৌদ্দ দলসহ যারা পরিকল্পিত ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় যারা অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে; ৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা এবং হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদ বারংবার কায়েমের চেষ্টা করেছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে; ৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত