ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মাঠে মাঠে আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বৃষ্টি
মাঠে মাঠে আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

নওগাঁয় আমন চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে চাষিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। তবে অনাবৃষ্টিতে আমন চাষ কিছুটা বিলম্ব হলেও বৃষ্টি হওয়ায় খুশি তারা। বৃষ্টি হওয়ায় বিঘাপ্রতি সেচ খরচ অন্তত ১ হাজার টাকা কমেছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে- এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি থেকে ৯ লাখ ৮৪ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১২০০ টাকা মূল্য হিসেবে যার বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি থেকে ৯ লাখ ৮৪ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর ১৮ হাজার ৮০০ জনকে উন্নত জাতের ৫ কেজি বীজ এবং ১০ ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। গত বছর মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭২৬ মিলিমিটার। তবে এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরের বরেন্দ্র জনপদ নওগাঁয় কাঠফাটা তপ্ত রোদ। অনাবৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনপদ। তবে আকাশে ঘনকালো মেঘের দেখা মিলেছে। গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে শীতল হয়েছে জনপদ ও প্রকৃতি। বৃষ্টিতে জমিতে জমেছে পানি। বৃষ্টিনির্ভর আমন ধান। ইরি-বোরো ধান কাটার এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে জমিতে রোপণ করতে হয় আমনের চারা। আষাঢ়েও দেখা মিলেনি বৃষ্টি। তবে এ বছর অনাবৃষ্টিতে কিছুটা দেরীতে আমনের ধান রোপণ শুরু হয়েছে। শ্রাবণের শেষ সময়ে ঘন ঘন বৃষ্টি যেন কৃষকদের আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। চাষিরা জমিতে হালচাষ ও রোপণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি এখন জেলার কৃষকদের আশীর্বাদ। কোমর বেঁধে কৃষকরা মাঠে নেমেছেন। মাঠে মাঠে জমিতে হালচাষ ও রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আমন ধানের ভালো ফলনের আশা তাদের। আমন মৌসুমে জমিতে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পানি সেচ লাগে। বৃষ্টির পানিতে চাষাবাদ করায় কৃষকদের প্রতি বিঘায় অন্তত ১ হাজার টাকা কমেছে। সে হিসেবে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি থেকে এ বছর ১৪৭ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেঁচে যাবেন চাষিরা। অপরদিকে আউশ ধানে একবার বৃষ্টিতে বিঘাপ্রতি ৩০০ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সে হিসেবে ৫৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে পানি সেচে কৃষক বাঁচবেন ১২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বৃষ্টির পানিতে পোকার উপদ্রব কম হওয়া সহ সারের কাজ করে। নওগাঁ সদর উপজেলার চক-জাফরাবাদ গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী।

তিনি বলেন- অনাবৃষ্টিতে দুই বিঘা জমিতে চারা রোপণ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বৃষ্টির অপেক্ষায় জমি ফেলে রেখেছিলেন। পানির অভাবে জমি প্রস্তুতে অন্তত ১৫ দিন দেরি হয়েছে। অবশেষে দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়েছে। অপেক্ষার প্রহর শেষে গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমেছে। বৃষ্টির পানি দিয়ে জমিতে হাল দিয়ে প্রস্তুত করে চারা রোপণ করেছেন। এক মৌসুমে যেখানে বিঘাপ্রতি পানি সেচ অন্তত ২ হাজার ৫০০ টাকা লাগতো। সেখানে শুধু জমি প্রস্তুতে তার বিঘাতে ১ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে। দুই বিঘায় তার ২ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানান এ কৃষক। বাচারিগ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন- আমন আবাদে রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে উঠানো পর্যন্ত ৭-৮ হাজার টাকা খরচ পড়ে। যেখানে ফলন হয় প্রায় ১৮-২০ মন। যদি মৌসুমের শুরু থেকে ভালো দাম পাওয়া যায় তাদের জন্য সুবিধা হয়। আর বৃষ্টিতে সারের উপকারের পাশাপাশি পোকার উপদ্রুবও কম হয়। বৃষ্টি হওয়ায় সেচ খরচ কিছুটা কমেছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন- মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি থাকলেও পরবর্তীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিছুটা সম্পূরক সেচ এবং কিছুটা বৃষ্টির পানি দিয়ে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। তবে আবারও অনাবৃষ্টি শুরু হলে আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উপজেলাগুলোতে সেচপাম্প চালু রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে মনে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত