নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তবে শিক্ষার্থীরা অস্বস্তিতে পড়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না বলেও জানান তিনি। দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকাল রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রথম অফিসে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘একটা নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছিল ২০২১ সালে। এতদিন ধরে মাঠপর্যায়ে সব জায়গায় এগুলো নিয়ে গবেষণার তথ্য তৈরি হয়েছে। আমার কাছে আছে। পাঠ্যক্রম তো উন্নত করতেই হবে। সময় বদলাচ্ছে, কিন্তু যেটা তৈরি করা হয়েছে বর্তমান পর্যায়ে আমাদের যে শিক্ষক আছে তা দিয়ে সেটা বাস্তবায়ন করা এখন খুবই কঠিন।’ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের দেশের জন্য সর্বক্ষেত্রে উপযোগী তাও মনে করছি না। নতুন শিক্ষাক্রমকে খুব সম্ভবত কার্যকর করা সম্ভব বলে আমি দেখছি না। এটার বাস্তবায়ন তো খুব ভালোও হচ্ছে না। বিশেষ করে পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতিতে। ‘আমরা যা-ই করি না কেন, এই সাময়িক সময়ে আমরা আগের যে শিক্ষাক্রম, সেখানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করবো। কিন্তু এমনভাবে করবো যারা এরই মধ্যে ঢুকে গেছে, তাদের যেন কোনো অস্বস্তি না হয়। শিক্ষকদের যেন অস্বস্তি বোধ না হয়।’ বলেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, যে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়, সেটাকে তো রাখা যাবে না।’ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগেরটাতে ফিরে যাবো ধাপে ধাপে। এমনভাবে যাবো যেন ডিসকন্টিনিউটি না হয়। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় কোনো অস্বস্তি সৃষ্টি না হয়। তবে কীভাবে যাবো সেটি একটি ফর্মুলার বিষয়। বিষয়টি জটিল।
শিক্ষায় বেহাল অবস্থা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকশূন্য। সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব চালু করতে হবে। এটা আমাদের জন্য একটা সুযোগও। আমরা চাইবো সত্যিকারের শিক্ষানুরাগী, যোগ্য ব্যক্তি যেন আসে। এখানে এতদিন ধরে বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক এটাও রাজনীতিকীরণ, দলীয়করণ করা হয়েছে। এখানে শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে আমরা এখানে এসেছি। অনেক বড় বড় পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে শৃঙ্খলার সঙ্গে আমরা যেন আবার ওই পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে পারি। সেটা যেন নিয়মমাফিক হয়, আমরা সেই চেষ্টা করবো। যোগ করেন তিনি।
শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, এখানে যে দখলদারত্বের রাজনীতি, চলে গেলো, আবার দখল হবে, সেটার মধ্যবর্তী সময় আমরা চেষ্টা করবো যেন একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অন্যান্য দেশে চলে, তেমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের স্কুল-কলেজের যে বোর্ডগুলো রয়েছে, এই বোর্ডগুলোতে প্রচণ্ড দলীয়করণ হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান যিনি তিনিই হয়তো এসএসসি পাস নন। এটা নিয়ে কী করা যায়। এখানে দখলদারির বিষয়, এদের সরিয়ে অন্য দল আসবে একই ধরনের, এটা আমরা চাই না। আমরা চাই স্কুল-কলেজগুলোর কমিটি ভালো মানুষদের দিয়ে গঠিত হতে পারে। সেটা যদি এখনই সম্ভব না হয়, সেটার বিকল্প কী হতে পারে সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।’