বর্তমান পরিস্থিতিতে চলমান এইচএসসির (উচ্চমাধ্যমিক) অবশিষ্ট পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়ে তারা এমন দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন। এতে ৬০-৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেয়ার মন মানসিকতা শিক্ষার্থীদের আর নেই। সেজন্য যে পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে তার আলোকে বাকি পরীক্ষার ফল দিতে হবে। এইচএসসি ২০২৪ ব্যাচকে অবহেলা করা হচ্ছে। এ সময় তারা ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে- জোর করে পরীক্ষা চাপিয়ে দেয়া যাবে না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক পরীক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন। সবার কথা বিবেচনা করে স্থগিত পরীক্ষা না দিয়ে বিকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রম কার্যকর করা সম্ভব বলে মনে করছি না স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, নতুন রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করতে ডিসেম্বর মাস চলে যাবে। এর ফলে সময় অপচয় হবে। বিকল্প মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ কোনো বোর্ড পরীক্ষা ৫-৬ মাস চলতে পারে না। অবিলম্বে এইচএসসি পরীক্ষর্থীদের এই দাবি মেনে নিতে হবে। মূলত, গত ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়া এইচএসি ও সমানের পরীক্ষায় এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। তবে বন্যার কারণে সিলেট শিক্ষা বোর্ডসহ ওই অঞ্চলের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা ৯ জুলাইয়ের পরে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ১৬ জুলাই রাতেই সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ১৮ জুলাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেলে ১ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪ আগস্ট থেকে পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাগুলোও স্থগিত হয়ে যায়। বার বার স্থগিতের পর ১১ আগস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে পরীক্ষা ফের স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সবশেষ আবার ১১ সেপ্টেম্বর থেকে অবশিষ্ট পরীক্ষা নেয়ার জন্য নতুন সূচি প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।