দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক মো. ইউসুফ আলী ২০১১ সালে বিদেশে যান। ২০১৭ সালে দেশে ফিরে আসার পর নানা চিন্তা মাথায় আসে তার। কি করবে সেটাই চিন্তা। এরপর তিনি রাজশাহীতে যান এবং পানের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এলাকায় এসে পান চাষ শুরু করেন। ২০১৮ সালে প্রথমে ১২ শতাংশ জমিতে পানের চাষ করেন। ২০১৯ সালে আরো ৮ শতক জমিতে চাষ করেন। ২০২২ সালে তিনি আরো ১৫ শতক জমি চাষ করেন। মোট ৩৫ শতক জমিতে পানের চাষ করে ইউসুফ আলী বছরে ৬ লাখ টাকা আয় করেন। এবং তার খরচ হয় আড়াই লাখ টাকা। পান বাগানের শ্রমিক বলেন, আমি এই বাগানে কাজ করি। পান বাগানে কাজ করার পাশাপাশি আমার ট্রেনিং হচ্ছে। আমার ইচ্ছা আছে এদের সঙ্গে কাজ করে এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করে ভবিষ্যতে বড় করে পানের বরজ দেয়ার।
পান ব্যবসায়ী আজিজ রহমান বলেন, আগে আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে পান সংগ্রহ করে দিনাজপুরের আশপাশের উপজেলাগুলোতে বিক্রি করতাম। বর্তমানে আমাদের এলাকায় ভালো মানের পান চাষ হয়। তাই আমরা আমাদের এলাকার পান বিক্রি করছি। বাইরে থেকে পান নিয়ে এলে পচা পান ও বাসি পান থাকতো। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। কিন্তু এখন আমাদের এলাকায় যে পানটি চাষ হচ্ছে মোটামুটি বাইরের থেকে অনেক ভালো। আমরা বিক্রি করছি। মোটামুটি আমরাও স্বাবলম্বী এবং কৃষকও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বর্তমানে আমাদের দিনাজপুরের পান নাটোরে পাঠাই। কৃষক মো. ইউসুফ আলী বলেন, আমি ২০১১ সালে বিদেশ গিয়েছিলাম। ২০১৭ সালে দেশে ফিরে আসি। এরপর চিন্তা করলাম আমার দুই ছেলে আর আমি এখন কি করব। এরপর আমি রাজশাহীতে যাই এবং সেখানে পান চাষের প্রশিক্ষণ নিই। আমার কিছু আত্মীয় আছে, তারা আমাকে সহযোগিতা করলেন। তারপর ২০১৮ সালে আমি প্রথম পান চাষ শুরু করি। ২০২০ সাল থেকে আমি পুরোপুরি লাভবান হয়েছি। আমার আশপাশে যদি কেউ পানের বরজ করতে চায় তাহলে আমি তাদের বীজ দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার পান তুলি। পান চাষ করে আমার বছরে ৬ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। এবং খরচ হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, নিত্যনতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরিতে আমাদের মাঠকর্মীরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ১ নম্বর আজিমপুরের পানচাষি মো. ইউসুফ আলী তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।