নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। তারপরও আন্দোলনকে সরকার হঠানোর দরজায় নিতে পারিনি। তবে এই দেশের ছাত্ররা, সোনার ছেলেরা আন্দোলনকে সফল করেছে। একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমরা সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে বুক ভরে শ্বাস নিতে চাই, প্রাণ ভরে কথা বলতে পারি, যেকোনো মানুষকে বন্ধু করে নিতে পারি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি নিজেদের সমর্থনের কথা জানিয়ে, দেশের সংস্কার করতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই সময় তারা দেবেন জানিয়ে মান্না বলেছেন, আমরা ক্ষমতার লোভ করি না।
গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুরের স্থানীয় এক কমিউনিটি সেন্টারে নাগরিক ঐক্যের জেলার মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। মান্না বলেন, এই সরকারে যারা আছেন, তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই, তারা কেউ রাজনীতিবিদ নন। তাই রাজনৈতিকভাবে ও প্রশাসনিকভাবে কতটা মোকাবিলা করতে পারেন, সেটা আমাদের দেখতে হবে। তাই আমাদের সমর্থন নিরঙ্কুশ না হলেও সমর্থনটা চালিয়ে যেতে চাই। যতদিন রাষ্ট্র সংস্কারে সময় লাগে, ততদিন আমরা সমর্থন রাখতে চাই। সেটা তিন মাস বা ছয় মাস না। তিনি বলেন কেউ ঘাড়ের উপরে উঠতে না পারে, এজন্য আইনের সংস্কার চাই, শিক্ষার সংস্কার চাই, অর্থনীতির সংস্কার চাই, রাজনীতির সংস্কার চাই। এসব সংস্কার করতে সময় লাগবে। অনেকেই বলছেন, সরকারকে তিন মাস সময় দিতে চাই, আবার বলছেন তিন মাস না হলে ছয় মাস সময় দিতে চাই। আপনারা সময় দেয়ার কে। এজন্য আমি বলতে চাই, রাষ্ট্র সংস্কারে যতদিন সময় লাগে, ততদিন সময় দিতে হবে। আমরা ক্ষমতার লোভ করি না।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনা একটা প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলার (প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা) নিয়েছে, এরকম যত প্রকল্প আছে, সব প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তারা দেশকে উন্নয়নের নামে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই দেশটা নতুন করে গড়তে সময় লাগবে। মান্না আরো বলেন, দেশের স্বাধীনতা একবারই আমরা লাভ করেছিলাম। কিন্তু ১৭ বছর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশটি আমরা পেয়েছিলাম, সেই দেশটি আমাদের হাত থেকে ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। সেই ছিনতাই হওয়া দেশকে মুক্ত করে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। অথচ আমরা আওয়ামী লীগের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে, জমি দখল নিয়ে ভাবছি। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলো চলতে থাকলে, যে লাউ সেই কদুর মতোই হবে। এ সময় তিনি নিজ দলের নেতাকর্মীদের দল গোছানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভালো মানুষ না থাকলে ঘুরে ফিরে তারাই আসবে। এজন্য দুর্বৃত্ত সরাতে হলে ভালো কিছু নিয়ে আসতে হবে। যাতে মানুষ ভোট দেয়ার সময় ভালো মানুষকে খুঁজে পায়।’ আবু সাঈদের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা আবু সাঈদ হত্যার সাথে জড়িত তাদের কোনো দায়িত্বে রেখে তদন্ত পরিচালনা করা যাবে না। তাদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে।’ মতবিনিময় সভায় রংপুর জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আজাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণতন্ত্র মঞ্চের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব।