যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়নিসের একটি ফুটবল মাঠের মাঝখানে হঠাৎ করে ১০০ ফুট বিস্তৃত এবং ৩০ ফুট গভীর একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মাঠের পাশে থাকা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে গর্ত সৃষ্টি হওয়ার মূহূর্তটি। এতে দেখা যাচ্ছে, হঠাৎ করে মাঠে যেন কোনো কিছুর বিস্ফোরণ ঘটেছে। এরপর তৈরি হয় বিশাল গর্ত। ওই সময় মাটির নিচ থেকে তীব্র বেগে পানিও বের হয়ে আসে। তবে তখন মাঠে কেউ না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। হঠাৎ করে এমন গর্ত সৃষ্টি হওয়াকে ‘সিঙ্কহোল’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ধস-গহ্বর বা সিঙ্কহোল হলো কোনো কারণে ভূগর্ভের কোনো স্তর ধসে যাওয়ার কারণে ভূ-পৃষ্ঠতলে সৃষ্ট অবনমন বা গহ্বর (গর্ত)। ভূপৃষ্ঠের নিচে রয়েছে পানির প্রবাহ (যেখান থেকে আমরা গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের নিচ থেকে পানি উঠাতে পারি)। মাটির একদম নিচের স্তর বা ভূগর্ভস্থ পানির উপরিভাগে রয়েছে অনেক পাথর- যেগুলোকে বলা হয় কার্বনেট বেরক বা বেডরক। বছরের পর বছর বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে পানি প্রবাহ চলমান থাকা অবস্থায় ধীরে ধীরে ছোট পাথরগুলো সরে যেতে শুরু করে। পীঠশিলাগুলো (বেডরক) সরে যেতে যেতে মাটির তলদেশে এক সময় বিশাল আকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয়। বহু বছর ধরে তৈরি হওয়া গর্ত যখন বড় হতে থাকে তখন সেটির চারপাশের মাটি এবং পাথর সেই গর্তে নিমজ্জিত হতে শুরু করে। ফলস্বরূপ একসময় ভূগর্ভস্থ সেই গর্তের আয়তন বৃদ্ধি পেতে থাকে। উপরিভাগের জমি যখন আর সেই চাপ সহ্য করতে পারে না তখনই হঠাৎ মাটির উপরিভাগের বিশাল এলাকা সাথে নিয়ে সেটি মাটির তলদেশে বিলীন হয়ে যায়। এইভাবেই সৃষ্টি হয় দানব আকৃতির বড় বড় সব সিঙ্কহোল। একটি সিঙ্কহোল আয়তনের দিক থেকে ১ ফিট থেকে ১০০ একরের বেশি পর্যন্ত এবং উচ্চতার দিক থেকে ১০০ ফিট পর্যন্ত হতে পারে।