পুঁজিবাজারে কারসাজি
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যানসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশ ছেড়ে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়ে দেশের পুঁজিবাজার। বাজার অস্থির করার পেছনে জড়িত ছিলেন এমন আলোচিত আট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলাম, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, শেয়ারবাজারের আলোচিত কারসাজিকারক মো. আবুল খায়ের, শেয়ারবাজারের আলোচিত ব্যক্তি জাভেদ এ মতিন, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি সিডব্লিউটির এমডি মনিজা চৌধুরীসহ আট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হিসাব জব্দ করা ব্যক্তিদের নামে থাকা ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার সময় বাড়ানো হবে। লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে হিসাব স্থগিত হওয়া ব্যক্তিদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দেশের পুঁজিবাজারে গত কয়েক বছরে যেসব ব্যক্তি বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জাভেদ এ মতিন, আবুল খায়ের ও ছায়েদুর রহমান। এ ছাড়া, বিএসইসির গত দুই কমিশনের সহায়তায় শেয়ারবাজার থেকে নানাবিধ সুবিধা পেয়ে আলোচনায় ছিলেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, পরিচালক আদনান ইমাম, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফরচুন শুজের মালিক মিজানুর রহমান, জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানসহ তার ভাই ও পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে জাভেদ এ মতিন ছিলেন সাকিব আল হাসানের ব্যবসায়িক অংশীদার। সাকিব আল হাসান, জাভেদ এ মতিন, ফরচুন শুজের মিজানুর রহমান, এসএম পারভেজ তমাল ও আদনান ইমামরা ছিলেন শিবলী রুবাইয়াত ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে গড়ে ওঠা চক্র। কারসাজির মাধ্যমে তারা বিভিন্ন শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন।