পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে দূষণ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা আরো জোরদার করবে। বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকের সাথে এক বৈঠকের পর তিনি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরকে দেশের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলো এবং দূষণকারী কোম্পানিগুলোর তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা আরো উল্লেখ করেন যে, নদী সুরক্ষার জন্য ছোট পরিসরের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এরইমধ্যে খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে জলাধার উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু হবে।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তিস্তাসহ অন্যান্য অভিন্ন নদীগুলোর ওপর বাংলাদেশের অধিকার নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনার পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি তিস্তাপাড়ের মানুষের প্রত্যাশা বোঝার গুরুত্ব তুলে ধরে জানান, ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই বাংলাদেশ তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মহলেও তুলে ধরা হবে এবং বাংলাদেশের অধিকার নিয়ে কথা বলতে তিনি পিছপা হবেন না। গতকাল বুধবারের বৈঠকের পর, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তার সাথে তার আলোচনার মূল পয়েন্টগুলো তুলে ধরেন। তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, নতুন ইটভাটা লাইসেন্স ইস্যু করা বন্ধ করা হবে এবং অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইট তৈরির মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই দৃশ্যমান আইন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়াও, শীতের আগেই বায়ুদূষণ কমাতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হবে। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকলে নির্মাণ কাজের অনুমোদিত দেয়া হবে না। ইট ও বালুসহ নির্মাণসামগ্রী খোলা ট্রাকে পরিবহন নিষিদ্ধ করা হবে। সেপ্টেম্বর থেকে পলিথিন নিষিদ্ধ করার অভিযানও শুরু হবে। বৈঠকে, দুই নেতা চলমান এবং ভবিষ্যতের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, বন সংরক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীলতা নিয়ে আলোচনা করেন। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোতে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাংক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। উভয় পক্ষই পরিবেশ ও জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনে তাদের অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।