বিডিআর হত্যার পুনঃতদন্ত ও সেনা রিপোর্ট প্রকাশসহ চার দফা দাবি
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রায় ১৬ বছর পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিডিআরের সদস্যরা। তারা দাবি করেছেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডে জোর করে তাদের কাছ থেকে মিথ্যা সাক্ষ্য আদায় করা হয়েছিল। যারা সাক্ষ্য দেয়নি তাদের নানাভাবে নির্যাতন করে সাজা দেয়ার পাশাপাশি হত্যাও করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সেই সময় চাকরিচ্যুত নায়েক সালাউদ্দিন গাজী। এ সময় তিনি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল, বিডিআর হতাকাণ্ড নিয়ে সেনা তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ এবং যাদের বিনা দোষে সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তির দাবি করেন। নায়েক সালাউদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হয়নি তাদের নানাভাবে নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করা হয়েছিল। অনেককে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে পুনঃতদন্ত চাই। এছাড়াও চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল, সেনা তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ এবং বিস্ফোরক মামলায় যাদের আটক রাখা হয়েছে তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমরা সম্পূর্ণ নিরপরাধ। এই অবস্থায় আমরা আমাদের চাকরি ফেরত, বেতনভাতা, এলপিআরকালীন অবসর ভাতা, আমাদের সন্তানদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা চাই। এছাড়াও দোষীদের অবিলম্বে বিচার, নির্দোষ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, বিডিআরকে পূর্বের নামে, পূর্বের পোশাক ও পূর্বের সৎ সাহস ও পূর্বের প্রেরণায় নিয়ে যেতে হবে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই প্রতিশোধের নেশায় মেতে ওঠেন। সর্বপ্রথম টার্গেট করা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এবং জেল হত্যার প্রতিশোধের জন্য খুনি হাসিনা আর্মি অফিসার কিলিংয়ের পরিকল্পনা করতে থাকেন। ভারতকে খুশি করার জন্য ভারতের সাথে প্রায় ১৮/২০টি সম্মুখযুদ্ধে বিজয়ী বিডিআর বিহিনীর নাম ও নিশানা মুছে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকেন হাসিনা। তারই অংশ হিসেবে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস পূর্বেই কিছু বিডিআর জোয়ান আওয়ামী নেতাদের বাসায় মিটিং এবং বিভিন্ন দাবি করতে থাকেন। নায়েক সালাউদ্দিন বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ হত্যাকাণ্ডের দিন কালার মাইক্রোতে বিদেশি অস্ত্র ও সরঞ্জাম নিয়ে ১৫/২০ জন কিলার পিলখানায় প্রবেশ করে, তারা কারা ছিল তা তারা খুঁজে বের করার দাবি করছি। এছাড়া ২৫ ফেব্রুয়ারি কিলিং মিশন শেষে কাদের জন্য বিমান অপেক্ষা করল রানওয়েতে এবং তাদের সাথে সজীব ওয়াজেদ জয় কেন দেখা করলেন, তারা কারা ছিল, এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেও কেন জওয়ানরা সাহায্য পেলেন না, কালক্ষেপণ করে হত্যাকাণ্ডটি সফল করার সুযোগ করে দেয়া হলো! এসময় বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা জানান, ভারতের ষড়যন্ত্রেই পিলখানা হতাকাণ্ড হয়েছিল। তারা মনে করেন, ভারত প্রতিশোধ নিতেই বেছে বেছে বিডিআরের দক্ষ সদস্য ও সেনা অফিসারদের হত্যা করেছে। সেই সময় বিডিআর হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে নিতে সেনা সদস্যদের নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা। শুধু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্যই সেনাবাহিনীর জওয়ানদের জীবন দিতে হয়েছিল।