বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন। পৃথিবীর যেই প্রান্তেই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, তার বিচার বাংলাদেশের আদালতে হবে এবং তার বানানো আন্তর্জাতিক মানবতারবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনাল আদালতেই হবে। প্রয়োজনে তাকে টেনে-হেচড়ে দেশে আনা হবে। গতকাল বুধবার বিকালে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর বাসটার্মিনাল চত্বরে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। চকরিয়া উপজেলা, পৌরসভা ও মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির যৌথভাবে এ গণসংবর্ধনার আয়োজন করে। সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিচার বিভাগ ঢেলে সাজাতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহীদদের দাবি ছিল বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও অসম্প্রদায়িক স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র। যেখানে আইনের সুশাসন থাকবে সমান, অধিকার সমুন্বত থাকবে। আমরা আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করব। যে বিচারক বাংলাদেশের প্রকৃত বিচারক হবে, দক্ষ, সৎ, আইনের সুশাসন কায়েম করবে এবং ন্যায় বিচারক হবে। যদি তা না হয়-আমি বলব বিচারপতি খায়রুল ও কালো মানিকের মতো অবস্থা হবে। চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী, জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ আহমদ উজ্জল, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সভাপতি জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জানা যায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ এর বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া সদরে। দীর্ঘ ১০ বছর ২ মাস ১৪ দিন পর নিজ এলাকায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুটি গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্থানীয় বিএনপি।
বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে বিমানযোগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এরপর দলের নেতাকর্মীরা মোটর শোভাযাত্রা করে তাকে পেকুয়ায় নিয়ে যান। যাওয়ার পথে চকরিয়া বাস টার্মিনাল ও পেকুয়া আউটার স্টেডিয়ামে পৃথক দুটি গণসংবর্ধনা বক্তব্য দেন।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘দুটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এ ছাড়া সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বরণ করতে পথে পথে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে সংখ্যক মানুষ অব্যর্থনা জানিয়েছেন।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ জুন কক্সবাজারে জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৫ সালের ১০ মে রাতে রাজধানী ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। দুই মাস একদিন পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের গলফ কোর্স ময়দান থেকে উদ্ধার হন তিনি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কয়েক দিন পর সালাহউদ্দিন আহমেদ ঢাকায় ফিরে আসেন। এরপর কুমিল্লাসহ কয়েকটি বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে দুইবার ( ১৯৯৬ ও ২০০১) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও একবার (২০০৮) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।