ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

থাইরয়েড রোগীর খাবার

থাইরয়েড রোগীর খাবার

আমাদের শরীরে অনেকগুলো হরমোনাল গ্রন্থি আছে। সেগুলো থেকে বিভিন্ন রকমের হরমোন নিঃসৃত হয়। এমন একটি গ্রন্থি হচ্ছে থাইরয়েড গ্রন্থি। এটি আমাদের গলার সামনের দিকে থাকে। এই থাইরয়েড গ্রন্থি দেখতে কিছুটা প্রজাপতির মতো। তাই একে প্রজাপতি গ্রন্থিও বলা হয়। এখান থেকে থাইরয়েড নামের হরমোন নিঃসৃত হয়। বিভিন্ন কারণে এই থাইরয়েড গ্রন্থিতে কিছু ত্রুটি দেখা যায়। যার ফলে গ্রন্থির কার্যক্ষমতার ওপর প্রভাব পড়ে। দেশের প্রায় ৫ ভাগ মানুষ এই থাইরয়েড হরমোনের সমস্যায় ভুগছে।

থাইরয়েড হরমোন আমাদের বিপাক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরের তাপমাত্রা, চর্ম, চুল, হৃৎস্পন্দন, পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম, প্রজননস্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের গঠন, কোষের গঠন, ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই হরমোনের ভূমিকা অনেক বেশি। এ কারণে হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত হলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা খুবই জরুরি-

দেখা যায় হাইপোথাইরয়েডিজম ও হাইপারথাইরয়েডিজম। থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ কমে গেলে হয় হাইপোথাইরয়েডিজম আর বেড়ে গেলে হয় হাইপারথাইরয়েডিজম। এই থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণ মূলত আয়োডিনের প্রভাবে হয়ে থাকে। গ্রেভস রোগ, বহু প্রকোষ্ঠের গলগ-, বিষাক্ত এডিনোমা, থাইরয়েডের প্রদাহ, অতিরিক্ত পরিমাণে আয়োডিন গ্রহণ হাইপারথাইরয়েডিজমের অন্যতম কারণ। অন্যদিকে আয়োডিনের অভাব ছাড়াও অন্যান্য কারণে এ রোগ হতে পারে।

কিছু খাবার আছে যেগুলোকে গয়ট্রোজেনিক ফুড বলা হয়। এগুলো হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম- উভয় ক্ষেত্রেই বর্জন করতে হবে। এই খাবারগুলোতে উপস্থিত গয়ট্রোজেন নামের উপাদান আয়োডিনের শোষণকে প্রভাবিত করে। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, সরিষার শাক, মুলা, শজিনা ইত্যাদি। তবে এসব খাবার খুব ভালো করে রান্না করে খেলে তা নিরাপদ। এছাড়া চা-কফির ক্যাফেইন থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রভাবিত করে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। আবার গ্লুটিনসমৃদ্ধ খাবার থাইরয়েডকে প্রভাবিত করে। তাই আটা-ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে বা কম খেতে হবে। সয়াবিনজাত খাবারও খুবই কম পরিমাণে খেতে বা বাদ দিতে হবে। বেশি সোডিয়ামযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্যাকেটজাত খাবার বন্ধ করতে হবে। আয়োডিন বেশি হলে হাইপারথাইরয়েডিজম দেখা দেয়। এই রোগ হলে আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলোর মধ্যে আছে দুধ, ছানা, পনির, দই, সামুদ্রিক মাছ, ডিম, সামুদ্রিক স্পিরুলিনা, আয়োডিনযুক্ত লবণ ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে সাধারণ লবণের বদলে পিংক সল্ট খাওয়া ভালো। আয়োডিনের অভাবে হাইপোথাইরয়েডিজম হয়। তাই এ ক্ষেত্রে আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। আয়োডিনযুক্ত লবণ, দুধ, ছানা, পনির, সামুদ্রিক মাছ, ডিম, স্পিরুলিনাসহ সব সামুদ্রিক খাবার বেশি করে খেতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত