ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ

সংখ্যালঘু শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে

সংখ্যালঘু শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৪৯ শিক্ষককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে সপদে বহাল করা সম্ভব হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংখ্যালঘু নির্যাতন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাস। তিনি বলেন, পদত্যাগ করার জন্য নিয়মিত তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। হরিপদ দাস বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ধ্যায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ঘুপ্টি ইউনিয়নের ঘুপ্টি গ্রামে তার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। সেদিন কোনোরকমে পালিয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা জীবন বাঁচান। এরপর পরিবারের লোকজন বাড়িতে ফিরলেও তিনি এখনো ফিরতে পারেননি। তিনি কলেজেও যেতে পারেননি। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, আজ রোববার কলেজে যোগদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। হরিপদ দাস বলেন, পদত্যাগ করার জন্য নিয়মিত তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আগামীকাল কীভাবে কলেজে যাবেন, তা জানেন না। কলেজে যোগ দেয়া নিয়ে তিনি ভয়ে আছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক দিপংকর চন্দ্র শীল। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করানো হচ্ছে। সমাজের দুষ্কৃতকারীদের প্ররোচনায় শিক্ষকরা তাদের নিজের শিক্ষার্থীদের কাছে লাঞ্ছিত। যারা জাতিগঠনের কারিগর, তারাই আজ অপমানিত নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তারা এর নিন্দা জানান। ৫ আগস্টের পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংস নির্যাতন শুরু হয়েছে এবং তা এখনো চলমান বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এ সময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ায় এর নিন্দা ও মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

এই সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক সজীব সরকার। এ সময় আরো বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক জয় রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বর্ণা রানী দে, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জয়িতা বিশ্বাস, নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী লিংকন দত্ত প্রমুখ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করেছেন, উল্লেখ করে জয় রায় বলেন, যদি কোনো শিক্ষক অন্যায় করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু ঢালাওভাবে যদি সাধারণ শিক্ষকদের হয়রানি করা হয়, তাহলে তো শিক্ষাব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত