অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হেলেন লাফেভ এ কথা জানান। রাজধানী ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেলেন লাফেভ সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে, একইসাথে বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকার সাথে সম্পর্ক জোরালো করবে। প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম, প্রশাসন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে এবং বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করবে বলে জানান হেলেন লাফেভ। লাফেভ বলেন, মার্কিন সরকারপ্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাতে পেরে খুশি এবং একসঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
তিনি বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রয়াসে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এই সপ্তাহে তাদের কনস্যুলার পরিষেবা পুনরায় চালু করবে। তিনি বলেন, হাজার হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন শুরু করা হয়েছে, খুব শিগগিরই এই প্রক্রিয়ায় গতি আনা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সর্ববৃহৎ মানবিক সহায়তা প্রদানকারী হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি আরো তহবিল বরাদ্দ দেয়ায় এ বছরে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য সহায়তার পরিমাণও বেড়েছে। এসময় রোহিঙ্গাদের জন্য জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান হেলেন লাফেভ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল প্রদানসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর গভীর সংস্কারের দায়িত্ব রয়েছে, এবং একটি যৌক্তিক সময়ের পরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসময় বাংলাদেশে বন্যার্তদের সহায়তাকারী পক্ষগুলোকে ‘অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ‘সমন্বিত’ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে হেলেন লাফেভ বাংলাদেশে শ্রম ও সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কিছু উদ্বেগ তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টা তাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত এবং অন্তর্বর্তী সরকার সব নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানবাধিকার ইস্যু, সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র্যাবের প্রসঙ্গও আলোচনার সময় উঠে এসেছে।
মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেছেন, তার সরকার ন্যায্যবিচার নিশ্চিত করার প্রয়াসে বাংলাদেশকে একটি প্রসিকিউটরিয়াল সার্ভিস গঠনে সহায়তা করার চেষ্টা করছে।