বাংলাদেশে মানবাধিকার উন্নয়নে ইইউ’র সহযোগিতা প্রয়োজন
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত মানবাধিকার মজবুত করতে সহায়তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)। গতকাল সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এই আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটির সহযোগী পরিচালক (ইইউ অ্যাডভোকেসি) ক্লাউডিও ফ্র্যান্সাভিল্লা বলেছেন, ‘বিগত মাসগুলোতে বাংলাদেশের মানুষ অসীম বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের উন্নয়নের জন্য লড়াইয়ে তারা চড়ামূল্য দিয়েছে।’ তিনি আরো বলেছেন, তাদের সমর্থন করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া ইইউ’র দায়িত্ব। ক্লাউডিও বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের টানা আন্দোলনের ফলে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে এক স্বৈরাচারী সরকার ব্যবস্থার পতন হয়।
তিনি বলেছেন, এবারের আন্দোলন দমনে দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংসতা দেখা গেছে। সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। ক্লাউডিওর মতে, প্রধান উপদেষ্টা কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনায় ও বিভিন্ন রকম অবিচারের শাস্তি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। কিন্তু ড. ইউনূসের সফলতানির্ভর করবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের পদক্ষেপের ওপর। বাংলাদেশ ইইউ-এর ‘এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)’ সুবিধার আওতাভুক্ত। এর কারণে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বিনা শুল্কে রপ্তানির সুযোগ পেয়ে আসছে দেশটি। তবে এই সুবিধার পূর্বশর্ত হচ্ছে মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা। ক্লাউডিও বলেছেন, আগের সরকারের অনেক কাজ ছিল এইসব শর্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেছেন, ‘পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশের উত্তরণ নিশ্চিত করতে ইইউ-এর পক্ষ থেকে নতুন পদক্ষেপ নিতে হবে।’ বিবৃতিতে তিনি বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য ইইউ’র কাছে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। তার প্রথম সুপারিশ হচ্ছে, আসন্ন জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সভায় সম্প্রতি সংঘটিত গুরুতর অপরাধগুলোর তদন্ত ও জবাবদিহিতার জন্য ইইউ’র উচিত দেশটিকে সমর্থন করা। পাশাপাশি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের অভিযোগে জর্জরিত বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব বিলুপ্ত করতে বাংলাদেশের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। তৃতীয় ও সর্বশেষ সুপারিশ হচ্ছে, নিরাপত্তা খাত সংস্কারে ‘ইবিএ’-এর শর্তানুযায়ী মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশে বিনা বিচারে আটক সবার মুক্তি নিশ্চিতসহ অন্যান্য অবিচারের সমাধান করতে হবে। এসব পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশির মানবাধিকার সুসংহত করতে ইইউ সহযোগিতা করতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।