শেখ হাসিনার পরিবারের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে রিট
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এ রিট দায়ের করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী হলেন ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম। রিটে গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর, শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, সজিব ওয়াজেদ জয়, টিউলিপ সিদ্দিক ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে অভিযোগ ওঠা ৫ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতি প্রতিরোধে বিবাদীদের নিষক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, অভিযোগ তদন্তের পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এই মর্মে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগের তদন্তের জন্য দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ওমর শরীফ জানান, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকে গত মাসে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু দুদক কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত আগস্ট মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য প্রকাশ করে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামে একটি ওয়েবসাইট।
ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে বলা হয় এই আত্মসাতের কাজে তাকে সহায়তা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটমের কাছ থেকে একটি পারমাণবিক চুল্লি কেনার নামে এই বিশাল অর্থের লেনদেন করেন।
তবে ২৫ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ দেয়া হয়েছিল, এমন খবরকে ‘গুজব’ ও ‘মিথ্যা’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি।
ওইদিন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেন, ‘নির্দ্বিধায় বলতে পারি, এটি গুজব ও মিথ্যা। এ বিষয়ে আমাদের কোম্পানি রোসাটম (রূপপুর প্রকল্পে কাজ করছে) এরইমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে।
তবে সংবাদটি প্রচারের কিছুদিন পর রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন (রোসাটম) জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত অসত্য তথ্যগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পকে কলঙ্কিত করার একটি প্রয়াস হিসেবে বিবেচনা করছি। এই প্রকল্প বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি সমস্যার সমাধান এবং জনগণের কল্যাণের স্বার্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে।