খুলনা জেলার ফরিদুল হক মিঠু নামের এক ব্যক্তি ২০১৯ সালে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে ২৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৯৫,০০০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ২০২১ সালে সার্ভিস চার্জসহ সমুদয় ঋণ পরিশোধ করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তিনি ২০২৩ সালে ১৭ দিন জেল খাটেন। পরবর্তীতে ঋণ গ্রহীতা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের মামলা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামকে ২০,০০০ হাজার টাকা দিয়ে মামলা থেকে জামিন ও খালাস পান। বর্তমানেও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের নিকট তার চারটি ফাঁকা চেক জমা রয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষতিপূরণ ও প্রতিকার চেয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বরাবর আবেদন করেও ভুক্তভোগী ঋণগ্রহীতা কোনো প্রতিকার না পেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বেঞ্চণ্ড২ মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও অভিযোগকারী-ত্রিপক্ষীয় শুনানি গ্রহণ করে। শুনানিতে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ পর্যালোচনাপূর্বক এটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে ২০২১ সালে চড়া সুদে নেয়া ঋণের সমুদয় টাকা পরিশোধ করেও প্রায় দুই বছর পর ২০২৩ সালে ভুক্তভোগীকে অন্যায়ভাবে ১৭ দিন জেল হাজতে থাকতে হয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং এভাবে জেল খাটায় ভুক্তভোগীকে সামাজিক, আর্থিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে যে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে তা অপূরণীয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৩নং অনুচ্ছেদে গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ রয়েছে এবং ৩৫নং অনুচ্ছেদে বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনোক্রমেই উক্ত ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব নয়। তথাপিও ভুক্তভোগীর ক্ষতি কিছুটা লাঘবের জন্য নির্বাহী পরিচালক, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫, ০০০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা ভুক্তভোগীকে প্রদান করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বেঞ্চণ্ড২ এর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে অতি সম্প্রতি জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা প্রদান করেছে। সাধারণ জনগণ নিরুপায় হয়েই বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। আর এই বিপদের সুযোগে বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা কর্তৃপক্ষ ফাঁদে ফেলে ঋণ গ্রহীতাদের নিকট থেকে স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা চেক নিয়ে পরবর্তীতে মামলা দায়ের করে নিরপরাধ মানুষগুলোকে হয়রানি করে ও ঋণের চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করে মর্মে প্রায়শই অভিযোগ পাওয়া যায়। অসহায় ও দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের নিকট থেকে সার্ভিস চার্জের নামে ঋণের উপর উচ্চসুদে ২৪ শতাংশ টাকা আদায় করার ফলে ঋণগ্রহীতারা আরো নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। উক্ত সার্ভিস চার্জের পরিমাণ যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করে তা কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে এবং বেআইনিভাবে ফাঁকা চেক গ্রহণের বিষয়টি বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকে কমিশন হতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।