সমাবেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’
ভারতীয় মদদে উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ বলে জোর প্রচারণা চলছে
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাবি প্রতিনিধি
পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানাতে ভারতীয় মদদে উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ বলে জোর প্রচারণা চলছে বলে মন্তব্য করেছে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি‘ নামে এক প্ল্যাটফর্ম। সংগঠনটি বলেছে, ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি আদায়ের জন্য উসকানি দেয়া হচ্ছে। অথচ পাহাড়ের উপজাতিরা কেউ আদিবাসী নয়, তারা অভিবাসী। এছাড়া, এই এলাকা অস্থিতিশীল করে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত দক্ষিণ সুদান বা পূর্ব তিমুরের মতো আলাদা রাষ্ট্র তৈরি করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’-এর ব্যানারে এক প্রতিবাদী সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা। প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানাতে ভারতীয় মদদে উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ বলে জোর প্রচারণা চলছে। উপজাতিদের উসকানি দেয়া হচ্ছে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি আদায়ের জন্য। অথচ পাহাড়ের উপজাতিরা কেউ আদিবাসী নয়, তারা অভিবাসী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারত, মায়ানমার ও তিব্বত থেকে বাংলাদেশে অভিবাসন করে এসেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দখলদার (সেটেলার) যারা দস্যুবৃত্তি করতে করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করে জোর করে বাঙালিদের ভূমিচ্যুত করে দখলদারিত্ব চালিয়েছে। আবার কেউ বা আশপাশের অঞ্চল থেকে নিপীড়নের শিকার হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের এই উভয় শ্রেণিই বাংলাদেশের আদিম কিংবা প্রকৃত অধিবাসী নয়। তিনি বলেন, তাদের ‘আদিবাসী’ বলে প্রচার করা মানে একটি ঐতিহাসিক ও নৃতাত্ত্বিক সত্যকে অস্বীকার করা; যে প্রচারণার পেছনে ভারত, মিশনারি ও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিওর মদদ রয়েছে।
কারণ আদিবাসী স্বীকৃতি আদায় করতে পারলে আইএলও কনভেনশন কিংবা জাতিসংঘের ২০০৭ সালের কনভেনশন অনুযায়ী ‘রাইট টু সেলফ ডিটারমিনেশন’ বা স্বায়ত্তশাসন, আলাদা জাতীয়তা, আলাদা ভূমির মালিকানা ও সর্বশেষ স্বাধীনতার দাবিকে লেজিটিমেসি বা আইনগত বৈধতা দেওয়ার পথ খুলে যাবে। অথচ বাংলাদেশের উপজাতিরা কেউ-ই আদিবাসী নয়।
কাজেই উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ দাবি করা কিংবা সম্বোধন করা মানে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা, যা অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহিতা। বাংলাদেশের কেউ যদি এমন প্রচারণায় অংশ নেয়, তবে সে অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে অপরাধী হবে, তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ মুরসালীন বলেন, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো রাজার শাসন চলতে পারে না। পাহাড়ে জমি ক্রয় করতে গেলে চাকমা, বোমাং ও মং রাজাকে খাজনা দিতে হয়। এক বাংলাদেশে দুই নিয়ম কেন? মুহম্মদ মুরসালীন পাহাড়ে কথিত রাজাদের খাজনা দেয়া বন্ধের দাবি তোলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ শাহীন বলেন, পাহাড়ে উপজাতি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে। রাজনগর গণহত্যা, পাকুয়াখালী ট্র্যজেডি, মাটিরাঙ্গা গণহত্যা, ভূষণছড়া গণহত্যার ইতিহাস এখনো জনগণ ভুলে যায়নি।