ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে সিন্ডিকেটে জিম্মি আলুর বাজার

ক্ষোভ বাড়ছে ক্রেতাদের
রংপুরে সিন্ডিকেটে জিম্মি আলুর বাজার

রংপুর মহানগরীসহ জেলায় কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেয়ায় এর প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। এর ফলে কোল্ড স্টোরেজগুলোতে পর্যাপ্ত আলু থাকার পরও কমছে না আলুর দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতাসহ সচেতন মহল। এজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং কোল্ড স্টোরেজে তদারকি বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তারা।

সরেজমিন রংপুর সিটি বাজার, মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, সাহেবগঞ্জ, কেরানীরহাট, লালবাগ, মর্ডান, ধাপ ও তামপাটসহ মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে খুচরা বাজারে কার্ডিনাল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায় আলু বিক্রি করছেন দোকানিরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা ও নীলফামারীসহ এ অঞ্চলে এ অর্থ বছরে ১ লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩৫৪ টন। যা গত বছরের তুলায় ৩ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে ৩৮টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এসব স্টোরেজে ধারণক্ষমতা রয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৭ টন। সেই অনুযায়ী এখনো বেশিরভাগ আলুই রয়েছে স্টোরেজে।

পাইকারি বিক্রেতারা জানান, এই সময়টাতে গৃহস্থ বা আলু উৎপাদনকারীদের ঘরে আলু থাকে না। যা আছে স্টোরে রয়েছে। গত বছর ২৫০ টাকা বস্তা প্রতি ভাড়া থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই এ বছর নেয়া হচ্ছে ৩৮০ টাকা। এই কারণে কোনোভাবেই বাজারে আলুর দাম কমছে না। মূলত বিদ্যুতের দাম বেশির অজুহাতে আলুর সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে, যা অযৌক্তিক বলছেন তারা।

রংপুর নগরীর লালবাগ বাজারে কথা হয় আলুর পাইকারি বিক্রেতা নুর আলম ও জলিল মিয়ার সাথে। তারা বলেন, বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু রয়েছে কোল্ড স্টোরগুলোতে। তারা দাম ছাড়ছে না। স্টোরেই প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ছে ৪৬ টাকা। সেই আলু রিকশায় আনা-নেওয়া খরচসহ ১টাকা বেশি দরে বিক্রি করলেও ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তারা বলেন, আপনারাই বলুন তো ৫০ কেজি আলুর বস্তা ভাড়া কেমন করে ৩৮০ টাকা হয়।

ক্রেতা মেজবাহুল মিয়া ও রাফায়েল নুর বলেন, প্রতিটি সংসারে নিত্যদিনের প্রয়োজন হয় আলুর। কিন্তু বর্তমানে আলুর বাজার সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছে। রংপুরের উৎপাদিত আলুর দাম যদি এত হয় তাহলে চলবে। এজন্য কোল্ড স্টোরেজের সিন্ডিকেট ভাঙা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানিয়েছেন, চলতি বছর রংপুরসহ সারা দেশে চাষিদের কাছ থেকেই বেশি দামে আলু বাজারে এসেছে। হিমাগারে রাখা আলুর দামও বেশি পড়ছে। বিদ্যুতের দাম বেশি, পরিবহন মজুরিসহ অন্যান্য খরচ প্রতিনিয়তই বাড়ছে। গত বছর আলুর যে সংকট হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য বাড়তি যে উৎপাদন দরকার ছিল সেটা হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত