নিজের ভেড়া নিয়ে কথা বলতে গেলে মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেনেগালের ২৪ বছর বয়সি মেষপালক শেখ মুস্তাফা সেকের। পরম মমতায় তার সনকো নামের একটি ভেড়ার গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে তিনি বলছিলেন, ভেড়া পালতে গেলে এটির প্রতি আপনার ভালোবাসা ও ধৈর্য থাকতে হবে। সেনেগালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর (ওসমান সনকো) নামে তিনি ভেড়াটির নামকরণ করেছেন। সনকো কোনো সাধারণ ভেড়া নয়। এটি স্থানীয় লাদুম প্রজাতির ভেড়া। এ প্রজাতির একেকটি ভেড়া বিলাসবহুল ফেরারি গাড়ির চেয়েও দামি। রাজকীয় চেহারার এ ভেড়ার ওজন ৩৯৭ পাউন্ড বা ১৮০ কেজি। এ কারণে প্রজাতিটি পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলোর মেষপালকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
মুস্তাফা সেক বলেন, ‘গত বছর সনকোর জন্ম হয়। তখন ওসমান সনকো সেনেগালের প্রধানমন্ত্রী হননি। তিনি তখন বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে কারাগারে। তার মতোই সনকো নামের ভেড়াটি ছিল ক্ষিপ্রগতির ও আমাদের আশার প্রতীক।’ ঝকঝকে সাদা পশম এবং প্যাঁচানো সিংয়ের জন্য লাদুম প্রসিদ্ধ। পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের সময় এ প্রজাতির ভেড়া জবাই দেয়া হয় না। মর্যাদাপূর্ণ পশু পালনের প্রতীক হিসেবে মূলত এটি লালন-পালন করেন সেনেগালের মানুষ। এসব ভেড়ার বিউটি কনটেস্টও (সুন্দরী প্রতিযোগিতা) সেখানে ব্যাপক জনপ্রিয়। সেনেগালের খুব কম মানুষেরই লাদুম কেনার সক্ষমতা আছে। দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ১ হাজার ৬০০ ডলারের কম। লাদুম জাতের একেকটি ভেড়ার দাম ৭০ হাজার ডলার পর্যন্ত। দিনের বেশির ভাগ সময়ই একটি লাদুমের কাটে সাজসজ্জা, মালিশ ও বিশেষ পারলারে ভিটামিন খাওয়ার মধ্য দিয়ে। এমনই একটি পারলারের মালিক বালা গাদিগা। তিনি তার মা-বাবার কাছ থেকে ভেড়া পালনে উৎসাহিত হয়েছেন। বালা গাদিগার সবচেয়ে পছন্দের ভেড়ার নাম বিআরটি।
সেনেগালের রাজধানী ডাকারে চলাচল করা বাস সার্ভিসের নামে তিনি এটির নামকরণ করেছেন। বালা গাদিগা বলেন, এই ভেড়া আকারে চমৎকার ও দেখতে অসাধারণ। এটির দাম ৪০ হাজার ডলার। শুধু বাণিজ্যের জন্যই লাদুম লালন-পালন করা নয়; বরং এটি আনন্দ পাওয়ারও একটি উৎস। আফ্রিকা মহাদেশের সব দেশ থেকেই তার কাছে এ প্রজাতির ভেড়ার গ্রাহকরা আসেন বলেও জানান তিনি।