সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজারে ভোটার প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ শুরু
প্রভাবশালীদের আত্মীয় পরিচয়ে ভোটার হওয়াদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজারে ভোটার প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ শুরু করেছে কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও ভিনদেশি কোনো নাগরিক যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের সময় কক্সবাজারে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা পরিচয় গোপন করে জনপ্রতিনিধি ও দালালের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন শর্তে ভোটার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রমে যাতে রোহিঙ্গা ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সর্তকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া রোহিঙ্গা ভোটারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি কক্সবাজারের কর্মরত সব সাংবাদিকদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া যারা বিভিন্ন প্রভাবশালীদের আত্মীয়-স্বজন পরিচয়ে ভোটার হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জারিকৃত পরিপত্র-১ এর নির্দেশনা অনুসারে কক্সবাজার জেলার আওতাধীন ৯ উপজেলার নাগরিকদের নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ভোটার হওয়ার জন্য বৈধ প্রমাণ/দলিল হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হবে এসএসসি/সমমান বা তদূর্ধ্ব অনলাইন সনদ, ভেরিফাইয়েবল কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ, ভেরিফাইয়েবল কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন নাগরিকত্ব সনদ ও বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র। সরকারি চাকরিজীবীর সন্তান ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত হবে। এক্ষেত্রে সরকারি চাকরির প্রমাণস্বরূপ অফিসপ্রধান কর্তৃক সত্যায়িত সার্ভিস বহির কপি, নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র প্রদান করতে হবে।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরো জানান, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ভোটার হওয়ার জন্য বৈধ প্রমাণ/দলিল হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হবে, এসএসসি/সমমান বা তদূর্ধ্ব সনদ না থাকলে-ভেরিফাইয়েবল কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ, ভেরিফাইয়েবল কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন নাগরিকত্ব সনদ, বাবা-মায়ের এএফআইএস যাচাই (আঙ্গুলের ছাপ যাচাই রিপোর্ট) ও স্থায়ী বাসিন্দা সনদ (জেলা প্রশাসন বা তার প্রতিনিধি কর্তৃক প্রদত্ত), ভূমিহীন সনদ, অনলাইন ভেরিফাইয়েবল ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের রশিদ/পর্চা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে), ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)। উল্লেখ্য, বাবা-মায়ের মধ্যে একজন বেঁচে থাকলে এবং তিনি ভোটার হয়ে থাকলে তার এএফআইএস যাচাই (আঙ্গুলের ছাপ যাচাই রিপোর্ট) এবং অন্যজনের অনলাইন মৃত্যু সনদ দাখিল করতে হবে। আর বাবা-মা কেউ বেঁচে না থাকলে উভয়ের অনলাইন মৃত্যু সনদ দাখিল করতে হবে।
এছাড়াও যেসব বাসিন্দা ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ক্যাটগরি ‘এ’ এবং ক্যাটগরি ‘বি’ এর আওতায় পড়বে না, তাদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উপজেলাভিত্তিক গঠিত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।