বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী সারজিস আলম বলেছেন, আমাদের দেশে সিস্টেমের মাধ্যমে যে ক্যান্সার তৈরি হয়েছে, সেই ক্যান্সার নির্মূল করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে যেতে হবে। এজন্য আমাদের ধৈর্য ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে এবং আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবে ছাত্র-জনতাকে বলতে চাই, আমরা কোনো অথরিটি না, আমরা প্রেসার গ্রুপ। সেই প্রেসার গ্রুপ হয়েই কাজ করে যেতে চাই । গত সোমবার বিকালে রংপুরের ঐতিহাসিক পাবলিক লাইব্রেরি শহীদ মিনার মাঠে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন । সারজিস আলম বলেন, রংপুর বিভাগের বরাদ্দ কম, দেশের প্রথম সারির সিটি কর্পোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয় বছরে যে বাজেট পায়, পুরো রংপুর বিভাগ সেই বাজেট পায়নি। এভাবে ১৬ বছর ধরে রংপুর বিভাগ বাজেট বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। এই রংপুরে এখন একটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। সেরা কোনো মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করতে পারিনি। তাই রংপুর বিভাগের উন্নয়নে আমাদের অধিকার আদায়ে আওয়াজ তুলতে হবে। আওয়াজ তোলার এখনই উত্তম সময়। এখন আওয়াজ তুলবেন কি না আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
তিনি আরো বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা একটি যৌক্তিক দাবি। এই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১ হাজার কোটি টাকা দরকার। তারপরও বাস্তবায়ন করা হয়নি তিস্তা মহাপরিকল্পনা। অন্যদিকে এই ফ্যাসিস্ট সরকার পদ্মা সেতু ও পদ্মা রেল সেতু বাস্তবায়নে ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। অথচ ১ হাজার কোটি মানুষের জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা করেনি। শুধু তাই নয় রংপুর বিভাগের ৮টি জেলা রয়েছে, সেই জেলাগুলো ২য় সারির জেলা, রংপুর বিভাগ দ্বিতীয় সারির বরাদ্দ পয়। এই বৈষম্য আর মানি না।
সারজিস আলম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার অনেক ভাইকে মামলা দিয়ে আদালতের বারান্দায় চক্কর দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। অনেকের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে, চাঁদাবাজি করেছে, হামলা করেছে, দখল করেছে। সেই একই কাজ আমরা যদি করি তাহলে ১ হাজার ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা ধুলিসাৎ হবে। আমাদের এসব থেকে বিরত থাকতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সারজিস বলেন, সবসময় আমার অংশগ্রহণ থাকবে তবে শিক্ষার্থী হিসেবে আমার অগ্রাধিকার হবে পড়ালেখা। কেননা দেশকে একশত বছর এগিয়ে নিতে হলে কোয়ালিটিফুল রিসোর্চ দরকার। বাংলাদেশে ভারতসহ বিশ্বের অসংখ্য দেশের জনশক্তি লক্ষ কোটি ডলার নিয়ে যায় তাদের বেতন হিসেবে। তাই ওই পদগুলোর জন্য আমাদের তৈরি করতে হবে। ২০২৪ সালের স্প্রিট ধরে রাখতে হলে, তরুণ সমাজকে বাঁচাতে হবে। এজন্য মাদকের ছোবল থেকে দূরে থাকতে হবে।