পাঁচ ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিনিধি

নগদ টাকার অভাবে গ্রাহকদের অর্থ দিতে না পারা পাঁচ ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এগিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের ফলে এসব ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিতে পারবে, যা তাদের সাময়িক সংকট কাটাতে সহায়তা করবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারের বিপরীতে গ্যারান্টি প্রদান করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এই পাঁচ ব্যাংক প্রাথমিকভাবে তারল্য সহায়তা পাবে। অন্য ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পাওয়া গেলে তারা গ্রাহকদের চাহিদামতো টাকা প্রদান করতে পারবে। এছাড়া অন্যান্য সংকটগ্রস্ত ব্যাংকগুলোও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সহায়তা পেতে পারে।

পাঁচ সংকটগ্রস্ত ব্যাংক : তারল্য সংকটে থাকা পাঁচ ব্যাংক হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এসব ব্যাংক আগে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এগুলোর পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নিয়েছে। এসব ব্যাংকের বাইরে ইসলামী ব্যাংকসহ আরো কিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে রয়েছে এবং এর মধ্যে আটটি ব্যাংক এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিশেষ ধারের জন্য আবেদন করেছে।

সংকটের কারণ : এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকা এসব ব্যাংক নানা অনিয়ম ও বিপুল ঋণের কারণে আর্থিক সংকটে পড়ে। নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পর আগের সরকারের সময় দেয়া বিশেষ তারল্য সহায়তা বন্ধ করে দেন। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট আরো তীব্র হয়। পাশাপাশি গ্রাহকদের আস্থা হ্রাস পাওয়ায় নতুন আমানত আসা বন্ধ হয়ে যায়, যা ব্যাংকগুলোর সংকটকে আরো ঘনীভূত করে তোলে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার জানিয়েছেন, কিছু কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে, যেগুলোর অনুমোদন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেয়া হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এসব দুর্বল ব্যাংককে পুনরুদ্ধার করতে গভর্নরের সঙ্গে পরামর্শ নেয়া হচ্ছে।

আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা : আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলোর প্রতি যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারলে নতুন আমানত আসবে, আর তখনই এই ব্যাংকগুলো সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। এই ধরনের তারল্য সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপগুলো ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।