ছাত্রদের দল গঠন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রথমে কোটা সংস্কার আন্দোলন, পরে সরকার পতনের এক দফা দাবি। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকারপ্রধানের দেশ ছেড়ে পলায়ন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন দেশের ছাত্র-জনতা। যার ফলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের, বিশেষ করে সংগঠনটির সমন্বয়কদের ভূমিকাই ছিল মুখ্য। সম্প্রতি সময় গুঞ্জন উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা নিয়ে। যদিও প্রথম থেকে সমন্বয়করা এই বিষয়টিকে অস্বীকার করে আসছেন। এমন গুঞ্জনের মধ্যেই গত ৮ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ নামে এক প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করা হয়েছে। মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক, আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব এবং সামান্তা শারমিনকে মুখপাত্র করে মোট ৫৫ সদস্যের এ জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে; যদিও সেটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়। অনেকেই মনে করছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি নতুন দল গঠনের লক্ষ্যেই আপাতত এই প্লাটফর্ম করেছে। তবে তাদের এই উদ্যোগকে ভালোভাবে নিচ্ছেন দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো। এ বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে কথা বলেছেন বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের নেতারা। তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্বে থাকা কেউ যদি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চায় তাহলে তারা নিরপেক্ষতা হারাবে। সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, এখন যারা দল নিরপেক্ষ হয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আছেন, তারাই যদি আবার রাজনীতি করার জন্য মাঠে নামেন; দল গঠন করার জন্য নামেন তাহলে তারা আর নিরপেক্ষ থাকলেন না। তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবে। এটা খুব স্বাভাবিক। এটা তো আমরা চাই না।
তিনি আরো বলেন, তারা যদি দল করতেই হয় তাহলে তাদের এখান থেকে বিদায় নেয়া উত্তম এবং এটা তাদের জন্য সম্মানজনক। আর যদি তারা এই দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে পালন করতে পারেন তাহলে মোস্ট ওয়েলকাম। এই বিষয়গুলো হয়তো জনগণের মাঝে উদ্বেগের জন্ম দেবে। জামায়াত আমির বলেন, দল যে কেউ করতে পারেন, তাদের অধিকার আছে। এখানে বাঁধা দেয়ার কেউ নেই। এটা বাঁধা দেয়া হলো একটা ফ্যাসিস্ট মানসিকতা। যেমনটি করেছিল বিগত সরকার। আমাদের তো শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধই করে ফেলল তাড়াহুড়ো করে। নির্বাচনের আগে যদি অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারা যদি দল করে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়; সেটা কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সেটা কীভাবে করবে তারা! তারা তো তখন দায়িত্বে থাকবে। এটা করার কোনো সুযোগ নেই তাদের। নির্বাচন তো তারাই দিবে। তাদের হাতেই তো নির্বাচন হবে। এটা নীতিগতভাবে হয় নাকি এটা তো সম্ভব নয়। এমনকি তারা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় যদি কোনো দলকেও ফেবার করেন সেটাও তো ঠিক হবে না।