সবার ক্ষোভ ওবায়দুল কাদেরের ওপর
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কোনো সন্ধান নেই। আত্মগোপনে আছেন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতারা। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জানা গেছে, দলের এই চরম পরিস্থিতির কারণ খুঁজছেন অনেক আওয়ামী লীগ ঘরানার বুদ্ধিজীবী ও প্রবাসী নেতারা। তাদের আলোচনায় বারবার উচ্চারিত হচ্ছে শুধু একটি নাম, ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের অনেকেই সীমান্ত পার হয়ে প্রতিবেশী একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এই সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০। তারা প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কারণ নিয়ে আলোচনা করছেন। নেতাদের এ আলোচনায় পারস্পরিক নিন্দা ও সমালোচনার পাশাপাশি দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ ঘুরেফিরেই আসছে। এসব নেতা মনে করেন, ওবায়দুল কাদেরের জন্য ডুবেছে আওয়ামী লীগ সরকার। তার দম্ভণ্ডঅহমিকাই দলের জন্য কাল হয়েছে। তবে ঘুরেফিরেই আসছে ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ।
নেতাদের বক্তব্য, ক্ষমতার দম্ভ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত অসংলগ্ন বক্তব্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের শুধু সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের মর্যাদাই ক্ষুণ্ণ করেননি, একটির পর একটি ভুল পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে পুরো আওয়ামী লীগের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। দলীয় পদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় দলটির অন্য নেতাদের দেয়া অনেক সৎ পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন।
কর্মীবান্ধব মনোভাব না থাকায় তারাও থাকতেন সাধারণ সম্পাদক থেকে অনেক দূরে। সাধারণ সম্পাদক পদে টানা তিন মেয়াদে মনোনীত হওয়ার পর ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ করছেন তারা। প্রবাসী নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাই শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই দলীয় ফোরামে বিষয়টিকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ওবায়দুল কাদের ও তার কয়েকজন সমর্থক নেতা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে না গিয়ে শক্তি প্রয়োগের পথকে উৎসাহিত করেন। বক্তব্যের মধ্যে ক্ষমতার দম্ভ দেখানো ওবায়দুল কাদেরের সংস্কৃতি হয়ে উঠেছিল। যার পরিণতিতে কর্মীদের অরক্ষিত রেখেই এক এক করে গোপনে দেশ ছাড়তে হয়েছে তাদের।