আরাকান আর্মিকে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধের দাবি
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান আর্মিকে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড ইয়ুথ মুভমেন্ট বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে সংগঠনটি বলছে, রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ উত্থাপন করতে হবে এবং তারা যাতে আমাদের দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে না পারে সে ব্যাপারেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সঙ্গে নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে করে সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানান ইউনাইটেড ইয়ুথ মুভমেন্ট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক এলাহী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতিগত নিধনের শিকার হওয়া নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূলের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঐতিহ্যবাহী আরাকান রাজ্যকে রোহিঙ্গা শূন্য করে ফেলা। সেই ধারাবাহিকতায় আজও আরাকানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বিরামহীন নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই ও লুটপাট চলছে অহরহ। গত ১০০ বছরে আরাকান রাজ্যে কী পরিমাণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে হত্যা করা হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। তৌফিক এলাহী বলেন, বিগত ২০১৭ সালে মায়ানমারের রোহিঙ্গা বিদ্বেষী জান্তা বাহিনী ও মগ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির পরিচালিত সম্মিলিত গণহত্যায় ৩৬ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ছাড়াও অর্ধ লক্ষাধিক মা-বোনকে ধর্ষণ করা হয়। সেই বর্বরতম গণহত্যা থেকে বাঁচতে সে সময় ১ মিলিয়নেরও অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালের সেই বিভীষিকাময় রোহিঙ্গা গণহত্যায় যে সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল, তারাই হলো আজকের আরাকান আর্মি। আর এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পূর্বসূরিরাই ছিল সেই কুখ্যাত মগ জলদস্যু, যারা বিগত কয়েকশ বছরে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ও বাঙালি জেলে ও ব্যবসায়ীদের কিডন্যাপ করে বিভিন্ন দেশে দাস হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেই শত শত বছর আগে থেকেই এই মগ সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গাদের জনগোষ্ঠীকে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন করার মাধ্যমে আরাকান রাজ্যকে রোহিঙ্গাশূন্য করার ভয়াবহ চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। তিনি বলেন, সেই মগ জলদস্যুদের উত্তরসূরি হিসেবে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মিও আজ একই কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি তাদের ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে আরাকান থেকে জোরপূর্বক হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে বাস্তুচ্যুত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। যে কারণে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে সীমান্তে ভিড় করছে, অথচ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কখনোই চায় না যে, তারা বাংলাদেশে থাকুক। তারা প্রত্যেকেই নিজ ভূমি আরাকানে সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে ফিরে যেতে চায়। মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইয়ুথ মুভমেন্ট বাংলাদেশের সভাপতি মু. দ্বায়ীফ সলেমুন, প্রচার সম্পাদক খুবাইব মাহমুদ প্রমুখ।