কানাডা-অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হচ্ছে এনআইডি কার্যক্রম
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, অনেকে পায়ের আঙুলের ছাপ দিয়েও ভোটার হচ্ছেন। সিস্টেমে ঘাটতি ছিল, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে উন্নত করছি।
গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত অনলাইন বৈঠকপূর্ব ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ২০১৫ সালে ভোটার হওয়ার পর সম্প্রতি এক ব্যক্তি পুনরায় ভোটার হতে চেয়েছেন- এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্মকর্তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট ওলট-পালটের কথা বলেন। বাঁ হাতের জায়গায় ডান হাত ব্যবহারের কথা বলেন। সচিব বলেন, বাঁ হাত-ডান হাতের বিষয় তো পরে, পায়ের আঙুল দিয়েও নাকি অনেকে ভোটার হচ্ছেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেখানে নেয়া হচ্ছে, সেই জায়গা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার চেষ্টা করছি। সিস্টেমে যেহেতু ঘাটতি ছিল, এগুলো ধীরে ধীরে আমরা ডেভেলপ করছি। এগুলোই তো সংস্কার। যে কর্মকর্তারা এসব করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, আমার লোক যদি ভুল করে থাকে, তাহলে ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি কোথাও গাফিলতি হয়, জানাবেন।
রোহিঙ্গা ভোটার ঠেকাতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে আমরা কর্মকর্তা নিয়োগ করেছি। তাদের ভোটার করার ক্ষেত্রে যিনি জড়িত থাকবেন, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। দুদক থেকে অভিযোগ এসেছে, তদন্ত চলছে। একজনের আঙুলের ছাপ অন্যজনের সঙ্গে মিলে গেলে সমাধান পেতে মাঠ পর্যায় থেকে ভুক্তভোগীকে ইসিতে আসতে হয়, এ বিষয়ে ইসির উদ্যোগ জানতে চাইলে সচিব বলেন, এখন থেকে আর ঢাকায় আসতে হবে না। উপজেলা কার্যালয়েই সমাধান পাওয়া যাবে। বিষয়টি ডিসেন্ট্রালাইজ (বিকেন্দ্রীভূত করা) হয়ে গেছে। মাঠপর্যায়েই সেবা পাবেন।
এদিকে অবশেষে প্রবাসে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসীরা পাবেন এই সেবা। তিনি বলেন, প্রবাসী ভোটার সাতটা দেশে চলমান আছে। যেখানে প্রবাসী আনুপাতিক হারে বেশি সেখানে আস্তে আস্তে চালু করব। শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চালু হবে এই সেবা। এছাড়া যুক্তরাজ্যে লন্ডনের পর এবার বাকিংহামেও চালু হচ্ছে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্দান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন সম্প্রতি পদত্যাগী কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।