যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, উপেক্ষা করছে ইসরায়েল

যুক্তরাষ্ট্র কেন ইসরায়েলকে এই সংঘাত থেকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হলো? এর চেয়েও বড় প্রশ্ন হতে পারে: যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ ইসরায়েলকে কোনো কিছু থেকে নিবৃত্ত করতে পারে?

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত বছরের অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত সতর্ক করে আসছে যে, দক্ষিণ লেবাননে বোমাবর্ষণ বা স্থল অভিযানের মাত্রা ইসরায়েল বাড়ালে পুরো অঞ্চলজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি বৃহত্তর যুদ্ধও শুরু হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল উল্টো তাদের অভিযান মাত্রা আরো বাড়িয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল তীব্র বোমা হামলা শুরু করেছে এবং গত সোমবার তারা সীমিত স্থল অভিযানও চালিয়েছে। এর ফলে লেবাননে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহ, লেবাননের ও ফিলিস্তিনের কয়েকজন নেতা এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একজন শীর্ষ জেনারেলও আছেন।

প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র কেন ইসরায়েলকে এই সংঘাত থেকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হলো? এর চেয়েও বড় প্রশ্ন হতে পারে: যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ ইসরায়েলকে কোনো কিছু থেকে নিবৃত্ত করতে পারে? ইসরায়েল যে কেবল সংঘাত বাড়িয়ে চলেছে তা নয়। তারা একাধিক ফ্রন্টেও সংঘাত চালাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, গাজায় ফিলিস্তিনি মৃত্যুর সংখ্যা ৪১ হাজার ৬০০’র উপরে পৌঁছেছে- মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। গত বছর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অব্যাহতভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং একাধিকবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করেছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি অবৈধ বসতিরা প্রায় ১ হাজার ৩০০ হামলা চালিয়েছে। সেখানে তারা ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি, ফসল ও সম্পদ ধ্বংস করেছে। কিন্তু তাদের কোনো ধরনের জবাবদিহি করতে হয়নি। গাজা ও পশ্চিম তীর- এই দুটি অঞ্চলই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। যা জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ মেনে নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের গঠন প্রত্যাখ্যান করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সুস্পষ্ট চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্র যখন অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখনও ইসরায়েল তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন গাজার জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন, তখনও ইসরায়েল কোনো প্রতিক্রিয়া জানায় না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যখন লেবাননে একতরফা পদক্ষেপ নেয়ার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক করে, তাতেও ইসরায়েল গুরুত্ব দেয় না। ইসরায়েল তাদের ইচ্ছামতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। আর এই সংকটের সমাধান বের করার দায় পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওপর।