বগুড়ায় কৃষকরা পতিত জমিতে আগাম মিষ্টিকুমড়া চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উর্বর মাটিতে মিষ্টিকুমড়া চাষকে কেন্দ্র করে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো। অন্যান্য ফসলের তুলনায় মিষ্টিকুমড়া চাষে উৎপাদন খরচ কম এবং লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগে কৃষকদের মিষ্টিকুমড়া চাষে উৎসাহিত করছে। সহজ পদ্ধতি ও কম পানি সেচের প্রয়োজনীয়তার কারণে ফসলটি ভালো ফলন দিচ্ছে।
বর্গাচাষি সরাফত আলী বলেন, এবার মিষ্টিকুমড়া চাষ করে ভালো ফলন পাব। আগের তুলনায় এ ফসলটি চাষ করতে পারায় আমাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটা ভালো হচ্ছে। এখন সারা বছরই জমি কাজে লাগাতে পারছি। গত ২০ থেকে ৩০ দিন আগে থেকে কৃষকরা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার বীজ বপণ করতে শুরু করে। কৃষকদের রোপণ করা মিষ্টিকুমড়ার গাছ এখন বেশ বড় হয়েছে।
তিনি আরো বলেন- আমি গত বছর মিষ্টিকুমড়া চাষ করে বিঘাপ্রতি ২০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছি। এ বছর দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষে ব্যস্ত সময় পার করছি। মিষ্টিকুমড়ার জমিতে আগাছা পরিষ্কার করতে, শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি দিতে, রোগাক্রান্ত গাছে কীটনাশক প্রয়োগ এবং সার প্রয়োগ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ধানচাষ করে যে আয় হয় তার চেয়ে মিষ্টিকুমড়া চাষ করে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়। তাই কৃষকরা এ বছর মিষ্টিকুমড়া চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া ভালো থাকলে এ বছর আবারো মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলন হবে। মিষ্টিকুমড়া চাষে সময় এবং পরিশ্রম কম লাগে বলে আমাদের জন্য এটি এক বিশেষ আশীর্বাদ হয়েছে। বর্তমান বাজারে মিষ্টিকুমড়ার চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে এটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি কুমড়া প্রায় ৫ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয় এবং বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে।
কৃষকদের এই উদ্যোগ তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে এবং এলাকার কৃষকদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।