সিন্ডিকেটেই অস্থির বাজার!
* সরকারের উদ্যোগে মিলছে না সুফল * জনমনে অস্বস্তি
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গত দুই সপ্তাহ থেকে আবারও বাজারে আগুন লাগতে শুরু করেছে। সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস এমনকি ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। এতে জনমনে অস্বস্তি দানা বেঁধেছে। ১ মাস আগেও বাজার দরে কিছুটা স্বস্তি ছিল। কিন্তু সে চিত্র এখন পুরোটাই ভিন্ন। ক্রেতা-বিক্রেতা মনে করছেন, সিন্ডিকেটের কারণে আবারও বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তার কোনো সুফল মিলছে না। সম্প্রতি বন্যার কারণে ঢাকার পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, নেত্রকোনা, নরসিংদীসহ বেশকিছু এলাকায় সবজি ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় সংকট দেখা দেয়। কিন্তু তখনও সবজির দাম কিছু কম ছিল। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এখন চড়া। একজন ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যারা উৎপাদক আছেন তারা যদি সরাসরি বিক্রেতার কাছে পণ্যটি বিক্রি করে, মাঝে যদি কোনো ধরনের বাহক না থাকে তাহলে মুরগি কম দামে বিক্রি করা সম্ভব। বাজার ব্যবস্থায় যদি কোনো ধরনের কারসাজি অথবা সিন্ডিকেট না থাকে তাহলে উৎপাদক এবং বিক্রেতা দুজনই লাভবান হবেন। পাশাপাশি ক্রেতা কম দামে পণ্যটি কিনতে পারবেন। কারওয়ান বাজারের এক কাপড় বিক্রেতা বলেন, আমরা কিন্তু কাপড়ের দাম বাড়াই না। কিন্তু ঠিকই বাজার বিক্রেতারা দাম বাড়ান। তিনিও মনে করেন, খুচরা নয়, পাইকারি দরে যারা বিক্রি করেন এবং মাঠপর্যায় থেকে যারা ডিম, মাংস ও সবজি কিনে এনে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন তারাই মূলত দাম বাড়ান-কমান। তাদেরই আগে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তারাই দাম বৃদ্ধির হোতা বলে দাবি করেন তিনি।
একজন মুরগি বিক্রেতা জানান, তাদের কোনো দোষ নেই। মূলত তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন না। প্রতি কেজি ব্রয়লার তাদের কেনা পড়ছে ১৯৫ টাকা। তারা মাত্র ৫ টাকা লাভ করে প্রতি কেজি বিক্রি করছেন। গতকাল শুক্রবার কারওয়ান বাজারে লাল ও সাদা ডিম ১৬৫ থেকে ১৭০, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের বাজারের তালিকায় ডিমের দাম কম থাকায় কিছুদিন আগেও ডজনের কিনেছেন অনেকে। কিন্তু হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ায় সেই সংখ্যা এখন কমে আসছে।
যদিও সরকার থেকে এই ডিম বিক্রি নিয়ে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি সম্ভব নয়। কারণ, তারা যে দামে এখন কিনছেন সেই দরেও সরকার বেঁধে দিতে পারেনি।
কারওয়ান বাজারের একজন ডিম বিক্রেতা বলেন, সরকার ডিমের হালি নির্ধারণ করেছেন ৪৮ টাকা। কিন্তু আমাদের কেনা পড়ে ৫৩ টাকা। তাহলে আমরা কয় টাকা লাভে বিক্রি করব বলেন! বিক্রেতারা বলছেন, ডিমের দাম এই মুহূর্তে কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ, গরমে ডিমের দাম কমে। শীতে ডিমের দাম কিছুটা বাড়ে। আসছে শীতে এই ডিম প্রতি পিস ১৮ টাকাও খেতে হতে পারে বলে আশঙ্কা তার। আর হাঁসের ডিম প্রতি পিস খেতে হবে ২৫ টাকা। আজ হাঁসের ডিমের ডজন ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।