ঢাকা ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নোয়াখালীতে ফের দুর্ভোগ

লাঘবে নেই সমন্বিত উদ্যোগ
নোয়াখালীতে ফের দুর্ভোগ

নোয়াখালী জেলার নয়টি উপজেলার আটটিতে আবারো পানিবন্দি ১২ লাখের বেশি মানুষ। জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা, সদর উপজেলা, চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সেনবাগে, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্নচরসহ বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিন অতি বৃষ্টিতে আবারো পানিবন্দি হয়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা। এতে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানিসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ।

জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় বিশ বছর ধরে বৈঠক চলছে। গেল পরশু নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীর পৌরসভার জলাবদ্ধতা ও যানজট সমস্যার আলোচনা হয়েছে।

প্রায় শতবছরের পুরোনো সমস্যা নোয়াখালীর উত্তর অঞ্চল বিশেষ করে বেগমগঞ্জ উপজেলার জলাবদ্ধতা বা জলজট নিয়ে করা কৃষির উন্নয়নে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কৃষি সেচ প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দের পরও প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে কৃষির উন্নয়ন তো ঘটেইনি বরং প্রতি বছর বন্যা আর জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি রাস্তা-ঘাট ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাজার কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। আর এবারের ভয়াবহ বন্যা, একের পর এক বৃষ্টি কোনো উপায় পাচ্ছে না, স্থানীয় অসহায় জনগণ। সম্প্রতি গেল ২৬ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর নবাগত জেলা প্রশাসক খন্দকার ইফতেখার আহমেদ এলাকার কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে চৌমুহনী পাবলিক হলে এক মতবিনময় সভা করে এলাকার যানজট ও জলজট নিরসনের বিষয়ে আলোচনা করেন।

চৌমুহনী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী সভাপতি মোরশেদুল আমিন ফয়সল বলেন, তিনি (ডিসি) কোনো পরিকল্পনা বা কাজের সিদ্ধান্ত দেননি। তিনি কিছু লোকের মতামত শুনে বিষয়টি দেখবেন বলেই সভা শেষ করেছেন।। আমরাও বলেছি আমাদের আর আশ্বাস দিবেন না। বর্তমানে কাজের পরিবেশ আছে, আপনি কাজ করে দেখান। আমরা আপনার পাশে থাকবো। আপনাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।’ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেগমগঞ্জের এ জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে পাকিস্তান আমল থেকে নানা নামে প্রকল্প গ্রহণ করলেও শেষে কাজ শুরু হয়নি। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ২০ জুলাই-এলাকার কৃতি সন্তান ধীরাজ কুমার নাথ সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সচিব থাকাকালে ৩২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে প্রকল্পের কাজ শুরুর চেষ্টা করেন। তিনি অবসরে যাওয়ার পরে অজ্ঞাত কারণে কাজটি আর শুরু হয়নি। বিগত সরকারের আমলে কৃষি বিভাগীয় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি তুলে ছিলেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিগত সরকার আমলে নোয়াখালীর খাল খননে ৩০০ কোটি টাকাও নয়-ছয় করে ব্যয় করায় এলাকার জলজট রয়েই গেছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের মতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ৫০০ হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে, আরো ৫০০ একর অনাবাদি জমি চাষযোগ্য হবে। পুরো এলাকাটাই জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে।

নোয়াখালী বেগমগঞ্জ জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ২০১০ সাল থেকেই উপজেলা পরিষদে নানা ধরনের আলোচনা, সভা-সেমিনার করা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সভায় সিদ্ধান্ত নিলেও কার্যত সিদ্ধান্ত মতে কাজ করে না। প্রশাসনের ব্যবস্ততার অজুহাতে কঠোর কোনো ভূমিকা নেয়নি। ফলে বার বার সিদ্ধান্ত হলেও জলাবতার বাস্তবায়ন ছিল না।

ফলে ভুক্তভোগীদের দাবি প্রশাসন কঠোর ভূমিকা নিলে এলাকার দীর্ঘদিনের জলজট ও যানজট সমস্যার সমাধান হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত