নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
গতকাল রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন স্টেডিয়ামে তার চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতির লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার গ্রামের বাড়িতে। গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় কফিল উদ্দিন চৌধুরী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিন উদ্দিন, ওসি ইয়াছিন মুন্সী, বিএনপি সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মমিন আলী, সিরাজখান উপজেলার বিএনপির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শ্রীনগর উপজেলা জামায়াত ইসলামের সাবেক আমির ডা. আব্দুল লতিফ, মরহুমের পুত্র মাহি বি. চৌধুরী, শ্রীনগর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব ছিলেন। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭৯ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরী তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার দুই সরকারের সময়ই মন্ত্রী ছিলেন। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিটিভিতে তার ‘আপনার ডাক্তার’ অনুষ্ঠান ছিল খুবই জনপ্রিয়।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুবার জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং একবার বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।এরপর ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের জুন মাসে তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ২০০৪ সালের ৮ মে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরী দলের মুখপাত্র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য।
গত শুক্রবার রাত ৩টা ১৫ মিনিটে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে দুই মেয়ে এবং নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।