ছাত্ররা জীবন দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, ছাত্রদের রক্তে দেশের রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। জীবন দিয়ে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার কৃতিত্ব শুধুই ছাত্রদের। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকম-লীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিএম কাদের বলেন, যারা সরাসরি বিরোধিতা করেছে, তারা ছাড়া আমরা সবাই এই ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থন দিয়েছে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরাও রক্ত দিয়েছে। ছাত্রদের জীবন দেয়া সাফল্যকে গনিমতের মাল মনে করবেন না। রক্তে ভেজা এ সাফল্য ভাগবাটোয়ারার বিষয় নয়।
তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেয়ার কারণে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে পার্টির পদণ্ডপদবি উল্লেখ করে। আমাদের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ার কারণে গ্রেপ্তার হয়ে হাজতবাস করেছে। ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তব্য দিয়েছি। বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। কিন্তু নির্বাচনের পরও যেন দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে। শুধু নির্বাচনের দিনের জন্য গণতন্ত্র চাই না। সুন্দর নির্বাচনের পর যেন ক্ষমতায় গিয়ে কোনো দল দানবে পরিণত না হয় সে জন্য শাসন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে।
কোনো দল ক্ষমতায় গিয়ে যেন সংবিধান পরিবর্তন করে পরবর্তী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে বলে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সংবিধানের পরিবর্তন চাই না। তবে, সংবিধানের ক্ষমতা বলে যেন ক্ষমতাসীনরা আর দানব না হতে পারে। যাতে দেশের মানুষ আজীবন গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে পারে। দেশের মানুষের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতেই আমরা সংবিধানের সংশোধন চাই।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে সম্পাদকম-লীর মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, মনিরুল ইসলাম মিলন, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আতাউর রহমান আতা, মাইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন লেবু প্রমুখ।