হাসপাতালে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা
তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
হাসপাতালে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। চিকিৎসকদের কর্মস্থল রোগাক্রান্ত মানুষদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের স্থান হাসপাতালে প্রবেশ করে চিকিৎসকদের মারধর করার ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন মর্মে কমিশন মনে করে। অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমীচীন। এ বিষয়ে কমিশন স্বঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
সংবাদ প্রতিবেদনের বরাতে সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ২ অক্টোবর দুপুরে ২০-২৫ জনের একটি দল এ হামলা চালায়। এ ঘটনার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুফতি কামাল হোসেনকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে মুফতি কামালের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির কর্মীও রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুপুরে হঠাৎ করেই ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) চন্দন দাসকে জোর করে বের করে মারধর শুরু করে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ও ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা তাদেরও বেধড়ক মারধর করে। ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, মো. শিমুল শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল জরুরি বিভাগে হামলা করে। তারা চন্দন দাসকে বের করে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। তিনি ও ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া মারধর ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও মারধর করে।
ওই চিকিৎসকের ভাষ্য, হামলাকারীরা এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে গালাগাল করে। শিমুল শেখের সঙ্গে হামলায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শাহীন ও একমি ফার্মাসিউটিক্যালসের রাব্বিকে চিনেছেন। হাসপাতালের ভেতরে এমন হামলার পর থেকে চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলার বিচার দাবি করেন তিনি। হাসপাতালের মতো একটি স্পর্শকাতর স্থানে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রহার করা তাদের মর্যাদার উপর যেমন চরম আঘাত একই সাথে চিকিৎসারত রোগীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থাকার অধিকারের চরম লঙ্ঘন মর্মে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন।
এ অবস্থায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে তিন চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যথাসত্ত্বর সম্ভব আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করত: আগামী ১২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী পুলিশ সুপার, বাগেরহাটকে বলা হয়েছে। আদেশের অনুলিপি সিভিল সার্জন, বাগেরহাটকে প্রেরণ করা হয়েছে।