সবসময় যে পার্লারে গিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আর সাধারণ কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধরে রাখা যায়। সেসব পন্থাই জানানো হলো যুক্তরাষ্টের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মায়ো ক্লিনিক’য়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
সূর্যালোক থেকে রক্ষা : ত্বকের যত্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করা। জীবনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপের মধ্যে থাকলে দ্রুত বলিরেখা পড়ে, ত্বকে দেখা দেয় নানান সমস্যা। এজন্য নিয়মিত দুই ঘণ্টা পরপর ‘বোর্ড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন’ মাখতে হবে। আর এসপিএফ হতে হবে অন্তত পক্ষে ১৫। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ছায়াতে থাকতে হবে। রাস্তায় থাকলে ছাতা ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে। কারণ এই সময় সূর্যের তাপ বেশি থাকে। ত্বক ঢেকে রাখে এমন হালকা পাতলা পোশাক পরার চেষ্টা করতে হবে। মাথায় চওড়া কার্নিশের টুপি পরা উপকারী।
ধূমপান না করা : ধূমপানের ফলে ত্বকের নিচে থাকা রক্তবাহিত শিরা-উপশিরা সঙ্কুচিত হয়ে যায়। যে কারণে রক্ত প্রবাহে বাধা পড়ে। ফলে ত্বক দেখতে মলিন লাগে। এছাড়া ত্বকে অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছাতেও বাধা প্রাপ্ত হয়, যা কি না স্বাস্থ্যকর ত্বকের অন্তরায়।
ধূমপান করলে ত্বক টানটান রাখার উপাদান কোলাজেন এবং ইলাস্টিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া সিগারেট টানার সময় মুখণ্ডচোখ কুঁচকে ওঠে; ঠোঁটে চাপ পড়ে। এসবের কারণে মুখে দেখা দেয় সুক্ষ্ম বলিরেখা। ঠোঁট হয় কালচে।
ত্বক পরিচর্যায় সাবধানতা : প্রতিদিন ঘষামাজা এবং শেইভ করলে ত্বকে খুঁত তৈরি হতে পারে। এরচেয়ে যা করা উচিত তা হলো গরম পানি দিয়ে এবং বেশিক্ষণ গোসল করলে ত্বকের তেল ধুয়ে যায়। তাই গোসলের সময় কমাতে হবে। গরম নয় ব্যবহার করতে হবে কুসুম গরম পানি। ত্বকের ক্ষতি করে এমন রুক্ষ্ম সাবান ব্যবহার করা যাবে না। বেছে নিতে হবে মৃদু সাবান বা ক্লেঞ্জার। শেইভ করার সময় উপযুক্ত শেইভিং ক্রিম, লোশন বা জেল ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া ধারালো ব্লেড দিয়ে শেইভ করতে হবে সব সময়। আর উল্টা শেইভ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গোসলের পর আলতো চাপে দেহের পানি মোছা উপকারী। এতে ত্বকে আর্দ্রতা থেকে যাবে। ত্বক শুষ্ক হলে নিয়মিত উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে। এসপিএফ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার উপকারী।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, সবজি, পূর্ণ শষ্য ও চর্বিহীন মাংস খাওয়াতে অভ্যস্ত হতে হবে। প্রক্রিয়াজাত, তেলযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খেলে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়। এছাড়া চিনি ও মিষ্টি খাবার ত্বকের স্বাভাবিক কোমলতা কেড়ে নিতে পারে। ত্বক আর্দ্র রাখতে পর্যাপ্ত পানিও পান করতে হবে।
মানসিক চাপমুক্ত থাকাণ্ড নিয়ন্ত্রণহীন চাপ ত্বককে সংবেদনশীল করে দেয়। ফলে ব্রণসহ ত্বকের নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। দেহ ও ত্বক ভালো রাখতে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত কাজ করার চেষ্টা, যে শখ পূরণ করলে ভালোলাগে সেগুলো করা, শরীরচর্চায় অভ্যস্ত হওয়া- ইত্যাদি বিষয়গুলো মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।