ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

জৈব সারে বিষমুক্ত সবজি চাষ

জৈব সারে বিষমুক্ত সবজি চাষ

বগুড়ায় বিষমুক্ত সবজি চাষে ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার। চাষিরা জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি করে বিষমুক্ত সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত শাকসবজি ও ফলমূলে ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে তা ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ঝুঁকি কমায়। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি ও ফুলমূল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। পরিবেশবান্ধব কৃষি কেবলমাত্র পরিবেশ সংরক্ষণ নয়, বরং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে। এ ধরনের কৃষি পদ্ধতির প্রসার কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যা কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সাফল্য ও সমাজের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য সরবরাহ করবে। উন্নত ও সুস্থ সবল বীজ, সঠিক পরিচর্যা ও জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের মাটিতেই নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা যেতে পারে। তাই জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদনের দিকে নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরি। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাষিরা জৈব সার জমিতে স্তূপ করে ব্যবহার করছে। খরচ কম, উৎপাদন বেশি, ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ কম এবং জমির সঙ্গে দ্রুত মিশে উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে বলে চাষিরা জৈব সারে ঝুঁকে পড়েছে। জৈব সার দ্রুত ফসলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। মাটির রাসায়নিক ও ভৌত বৈশিষ্ট্যগুলোর উন্নতিও ঘটায়। এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জৈব প্রয়োগে কৃষকদের উৎসাহিত করছে।

আরো জানা যায়, বগুড়ায় শীত (রবি) ও গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষাবাদ করা হয়। গ্রীষ্মকালীন সবজি উত্তোলন এখনো চলছে। মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে। এজন্য চাষিরা জমি তৈরি করে নিতে জৈব সার স্তূপ করে নিয়েছেন।

কৃষি অফিসের পরামর্শে এই জৈব সার ব্যবহার করছে। সবজি এলাকা হিসেবে খ্যাত বগুড়ায় গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে বগুড়ায় মোট সবজি উৎপাদিত হয় প্রায় লক্ষাধিক মেট্রিক টন আর রবি মৌসুমে জেলায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।

দেশের মধ্যে বগুড়া জেলা সবজি উৎপাদনে সবসময় এগিয়ে থাকে। বগুড়ায় মুলা, শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, লালশাক, পালংশাক, করলা, লাউ, কাঁচা মরিচ, ঢ্যাঁড়স, গাঁজর, মিষ্টি কুমড়া, টমেটোসহ নানা জাতের সবজি চাষ করে থাকে। বগুড়ার ১২টি উপজেলার মধ্যে সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, সারিয়াকান্দি গাবতলী উপজেলা সবজি এলাকা হিসেবে পরিচিত। এসব উপজেলায় বছরের বারো মাসই রকমারি সবজি ফলান কৃষকরা।

বগুড়ার সবজি চাষিরা বলেছেন, শীতকালীন আগাম জাতের সবজি চাষে যেমন লাভ রয়েছে তেমনি ঝুঁকিও আছে। বীজতলার ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরো বেশি। কমবেশি বৃষ্টি লেগেই আছে। পাশাপাশি রোদের সঙ্গে রয়েছে ভ্যাপসা গরম। এতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিটা অনেক বেশি। তবু ঝুঁকি মেনেই আগামজাতের সবজির বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। জমিতে এখন জৈব সার ফেলা হচ্ছে। এই সারের খরচ কম, লাভ বেশি, ফলন ভালো হয়। পোকামাকড়দের আক্রমণও কম হয়।

সবজির চাষাবাদে জৈব সার ব্যবহার করে উপকার বেশি হয়। আর কীটনাশক ব্যবহার কমে যায়। উৎপাদিত সবজিও ভালো মানের হয়ে থাকে। জৈব সার ব্যবহার করায় আমাদের খরচ অনেকটাই কমে যায়। লাভ অনেক বেশি হয়। তাছাড়া ক্রেতাদের মাঝে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা খুব বেশি। আর আমরা বিষমুক্ত সবজি চাষ করলে বেশি লাভ হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত