দেশে তিন কোটির বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ কাজের পাশাপাশি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে বর্তমানে তিন কোটিরও বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল বুধবার রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘কর্ম ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য, অগ্রাধিকার দেয়ার সময় এখনই।’ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতি-বিপিএর মহাসচিব ড. মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াস। এছাড়াও বক্তব্য দেন আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সেলর ফাতেমা তাশরিন মিতু ও মাহমুদা আলম। এসময় বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্র ও মানসিক স্বাস্থ্য এই দুইটা বিষয় ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সহযোগিতামূলক কর্ম পরিবেশ, কাজের উদ্দেশ্য ও দৃঢ়তা এই বিষয়গুলো থাকলে কাজের গতি বাড়ায়। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন ঝুঁকি রয়েছে। কর্মীর বৈষম্য, খারাপ কাজের পরিস্থিতি বা সীমিত স্বায়ত্তশাসন যা মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধু হতাশা এবং উদ্বেগের কারণে প্রতি বছর প্রায় ১২০০ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়। কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপকে বুঝতে এবং তা মোকাবিলা করার জন্য ব্যবস্থাপকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা উচিত। এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে আমরা সুস্থ কর্ম পরিবেশ তৈরি করা, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা, পর্যাপ্ত বিরতি ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা, অফিস সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার চর্চা করা, মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং মেন্টাল হেল্থ সাপোর্ট প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে আমরা মনের যত্ন নিতে পারি। বক্তারা আরো বলেন, যারা মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, রিহ্যাব সেন্টার, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এজন্য কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারলে কাজের মান বাড়বে। প্রসঙ্গত, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ এর জরিপ বলছে, লঘু থেকে গুরুতর মাত্রার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা প্রাপ্ত বয়স্ক ১৭ শতাংশ (নারী: ১৯ শতাংশ পুরুষ: ১৫ শতাংশ), ১৮ বছরের নিচের জনগোষ্ঠী: ১৩.৬ শতাংশ, মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর সংখ্যা এক হাজারের নিচে (মনোচিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী ও অন্যান্য প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী), ট্রিটমেন্ট গ্যাপ ৯০ শতাংশেরও বেশি (সব বয়সিদের মিলিয়ে)।