হিমালয়কন্যা খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশার চাদর পরছে। এ কুয়াশাই শীতের আগমনী বার্তা বয়ে আনছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে চারপাশ। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে দেখা যায়। তবে দিনের তাপমাত্রা কয়েক গুণ হাড়ে বেড়ে গেছে। এ দিকে সকাল থেকে কুয়াশার মধ্যে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে বিভিন্ন যানবাহনকে। আবহাওয়া অফিস জানায়, আকাশে মেঘ থাকার পাশাপাশি দক্ষিণ পশ্চিম বায়ুর বিদায়ে এই ঘন কুয়াশা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অনেকেই কুয়াশা ভেদ করে নিজ গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে স্থানীয়রা জানান, চলতি শীত মৌসুমের প্রথম এই ঘন কুয়াশা দেখা দিয়েছে গতকাল মঙ্গলবার।
ব্যারিস্টার বাজার এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ভোরে কাজের উদ্দেশ্যে বের হই। তবে গত কায়েকদিন হালকা কুয়াশা থাকলেও আজ প্রচুর কুয়াশা নেমেছে। এক কথায় শীতের প্রথম ঘন কুয়াশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিনে ভ্যাপসা গরম থাকছে। তবে আজ সকালে আবহাওয়া হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে শীত নামা শুরু করেছে।’
এক রিকশাচালক ও দিনমজুর বলেন, ‘শীত প্রতিবছর আগেভাগে আমাদের জেলায় শুরু হয়। আর এ কারণে আমরা যারা দারিদ্র পরিবার রয়েছি, শীতের সময়টিতে চরম বিপাকে পড়ে যাই।’ তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে আমরা ঠিকমতো সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা ও শীতবস্ত্র পাইনি। আশা করি এবার এই পরিস্থিতির শিকার হবো না। সরকোরসহ সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি, যেন আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়ানো হয়। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, পুরোপুরি শীত আসতে আরো দুই সপ্তাহের একটু বেশি সময় রয়েছে। এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘন কুয়াশা নামার কারণ হিসেবে আমরা মনে করছি আকাশে মেঘ থাকার পাশাপাশি দক্ষিণ পশ্চিম বায়ুর বিদায়ে এমনটা দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত সোমবার পঞ্চগড়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তবে এরআগে সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবু সাঈদ বলেন, পঞ্চগড় শীত প্রবণ জেলা। এ জেলায় প্রতিবছর শীতের দাপট বাড়ে। অনেক আগেই শীত নামে। এবার জেলার নিম্নআয়ের ও দারিদ্র মানুষের মধ্যে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আশা করি সবার সমন্বয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে পারবো।