ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় স্বার্থরক্ষাই সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার

নৌ-পরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা
জাতীয় স্বার্থরক্ষাই সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিরূপনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা প্রাধান্য পাবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময়ে ভারতের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ নৌ ও স্থলবন্দরের নানাবিধ উন্নয়ন নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

উপদেষ্টা স্থলবন্দর সমূহের কার্যক্রমকে দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে কিভাবে আরো বেশি গতিশীল করা যায় এবং উভয় দেশই স্থলবন্দরগুলো থেকে কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে আরো বেশি লাভবান হতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।

উপদেষ্টা বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র। যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ২৪টি স্থলবন্দর রয়েছে যেগুলো ভারতের স্থল সীমানার সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ ছাড়াও উভয় দেশের মধ্যে নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান। চট্রগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌপথে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। এ জন্য সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি ভারতের সাথে নৌযোগাযোগও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সহযোগীতায় বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। জনমুখী এ সব প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিরূপনের ক্ষেত্রে উভয় দেশ একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উপদেষ্টা বলেন, ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের উপর প্রতিষ্ঠিত। ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের পরীক্ষিত বন্ধু। অনুরূপভাবে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়নে সবসময় পাশে রয়েছে। ভারত বাংলাদেশের সাথে পারস্পরিক সমঅংশীদারিত্ব, আস্থা ও বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর যে কোনো উদ্যোগে ভারত সরকার বাংলাদেশকে সহযোগীতা করতে প্রস্তুত।’

বৈঠকে ভারতের বিনিয়োগকৃত আশুগঞ্জ নৌবন্দর, পায়রাবন্দর, মোংলাবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নের পাশাপাশি খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দর এর কার্যক্রম ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে বিশদ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশগত কারণে সারা বিশ্বেই প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্য সুপারশপে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে সারা দেশেই পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ কারণে দেশের অভ্যন্তরেও পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপদেষ্টা পাট ও পাটজাত পণ্যের উপর থেকে ভারত কর্তৃক আরোপিত অ্যান্টিডাম্পিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানান। উপদেষ্টা বাংলাদেশি নাবিকদের সহজে ভারতের ভিসা প্রাপ্তি ও কলকাতা বন্দরে জাহাজ থেকে স্থলে যাওয়ার বিষয়টি সহজ করার জন্য হাইকমিশনারকে অনুরোধ জানান। নৌ প্রটোকল রুটের বিষয়গুলো ত্বরান্বিত করার বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. মুহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত