বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ২৯০ মিলিয়ন ডলার
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে, অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট সময়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ঘাটতি কমেছে ২৯০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১০ শতাংশ। বাণিজ্য ঘাটতি কমার পেছনে দুটি প্রধান কারণ উল্লেখযোগ্য। প্রথমত, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি। এই দুইয়ের সমন্বয়ে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারে, যা দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস এবং অন্যান্য প্রধান রপ্তানি খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি এই বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। অন্যদিকে, আমদানি খরচ সামান্য হ্রাস পেয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আমদানি খরচ ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৯ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য কিছুটা স্থিতিশীল হওয়া এবং অভ্যন্তরীণভাবে কিছু আমদানি পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়াই আমদানি ব্যয় হ্রাসের অন্যতম কারণ।
বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের পাশাপাশি দেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। গত দুই মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্ট সময়ে চলতি হিসাবের উদ্বৃত্ত ১১১ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই হিসাবের ঘাটতি ছিল ৬১০ মিলিয়ন ডলার।
যদিও বাণিজ্য ঘাটতি এবং চলতি হিসাবের ভারসাম্য ইতিবাচক থাকলেও, আর্থিক হিসাব এখনও নেতিবাচক। তবে এর ঘাটতিও আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আর্থিক হিসাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৪৫ মিলিয়ন ডলারে, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এটি ছিল ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, আর্থিক ঘাটতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
সার্বিকভাবে, বাণিজ্য ঘাটতি এবং চলতি হিসাবের ভারসাম্য উন্নতির ফলে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারের গতিপ্রকৃতির উপর নির্ভর করে আগামী দিনে এই স্থিতিশীলতা কতটা বজায় থাকবে, তা সময়ই বলে দেবে।