অক্টোবর মাসে বিরল এক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে যাচ্ছেন পৃথিবীবাসী। রাতের আকাশে দেখা যাবে একটি ধূমকেতুকে, যেটি কি না শেষবার দেখা গিয়েছিল নীয়ান্ডারথালদের সময়। নতুন আবিষ্কৃত এই ধূমকেতুটির নাম সি/২০২৩ এ৩ (সুচিনশান-অ্যাটলাস)। সম্প্রতি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি এসেছিল এটি। এটিকে আবার আকাশে দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরো ৮০ হাজার বছর! ধূমকেতু সি/২০২৩ এ৩ গত ২৭ সেপ্টেম্বর সূর্যের সবচেয়ে কাছের বিন্দুতে (পেরিহেলিয়ন) পৌঁছেছিল এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুতে দক্ষিণ গোলার্ধের মানুষদের জন্য দৃশ্যমান ছিল। বর্তমানে এটি সূর্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং উত্তর গোলার্ধের মানুষ এটি অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত দেখতে পাবেন বলে জানিয়েছে নাসা।
নাসার মিটিওরয়েড এনভায়রনমেন্ট অফিসের প্রধান বিল কুক জানিয়েছেন, ধূমকেতুটি দেখার জন্য একটি জোড়া দুরবিন ব্যবহার করলে আরো ভালোভাবে দেখা যাবে। এটি উল্কাপিণ্ডের মতো দ্রুত আকাশের দিকে ছুটে যাবে না, বরং স্থির থাকবে এবং প্রতিরাতেই একটু একটু করে তার অবস্থান পরিবর্তন করবে। কুক বলেন, আপনি যদি খালি চোখে ধূমকেতুটি দেখতে পারেন, তবে দুরবিন ব্যবহার করলে আপনার অভিজ্ঞতা আরো দারুণ হবে। ধূমকেতুটি ২০২৩ সালে চীনের সুচিনশান মানমন্দির এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাটলাস টেলিস্কোপের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়, তাই এর নামকরণ করা হয়েছে সুচিনশান-অ্যাটলাস। ধূমকেতুটি ওর্ট মেঘ থেকে এসেছে, যা আমাদের সৌরজগতের বাইরের অংশে থাকা একটি গোলাকার ধূমকেতুদের সংগ্রহ।
এটি সূর্য থেকে অনেক দূরে অবস্থিত বলে জানিয়েছেন, অ্যারিজোনার লোয়েল মানমন্দিরের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. টেডি কারেটা। বিজ্ঞানীরা প্রথমে নিশ্চিত ছিলেন না যে বরফ, জমাট গ্যাস এবং পাথর দিয়ে গঠিত এই ধূমকেতুটি সূর্যের চারপাশে ভ্রমণ করে অক্ষত অবস্থায় ফিরতে পারবে কি না। তবে বিল কুক জানিয়েছেন, ধূমকেতুটি সফলভাবে অক্ষত রয়েছে এবং এটি সঠিকভাবে তার কক্ষপথ সম্পন্ন করেছে।