অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত মানবাধিকার লঙ্ঘন
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ২৪ নভেম্বরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগকে বলা হয়েছে। গতকাল বুধবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে বিধি বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, অমানবিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে কমিশন মনে করে। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে। গৃহীত সুয়োমটোর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের অভিমত, মাতৃত্বকালীন ছুটি একটি অধিকার এবং এ বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। ঘটনাটি ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে তা একইসঙ্গে অনৈতিক এবং অপরাধমূলক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে জোর করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া, মধ্যরাতে ৮ মাসের শিশুসহ ওই নারী শিক্ষককে কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে এমন আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ডলি আক্তার। তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানান, ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনি পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর থেকে নানাভাবে হেনস্তা করা শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগে তাকে পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলা হয়, অন্যথায় চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, পদত্যাগ না করায় গত ৯ অক্টোবর বিকালে কর্তৃপক্ষ তাকে মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে পদত্যাগ করতে জোর করেন। তখন তাকে একটি চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেয়া হয় এবং তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষ অমানবিকভাবে তাকে ওই দিনই মধ্যরাতে আট মাস বয়সি সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় রেখে আসে।