সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে বালুর ট্রাক রেখে অধিকার হরণের মামলায় গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক রায়হানুল ইসলাম সৈকত। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
ট্রাক রাখা ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও নাগরিক অধিকার হরণের দায়ে শেখ হাসিনাসহ ১১৩ জনকে আসামি করে গত ৪ অক্টোবর গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) লতিফ হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শরিফুল ইসলাম শাওন। মামলার এজহারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে এক নম্বর এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন-সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মার্স ফর ডেমোক্র্যাসি কর্মসূচির ডাক দেয় বিএনপি। যেখানে খালেদা জিয়ার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বালুভর্তি পাঁচণ্ডছয়টি ট্রাক বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রেখে উল্লিখিত আসামিরা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনের গেট বন্ধ করে দেন।
বেগম খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য রাস্তার উপরে ত্রাস সৃষ্টি করে তার গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন আসামিরা।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, মামলার আসামিরা গোপন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যেকোনোভাবে খালেদা জিয়াকে বাসা থেকে বের হয়ে সমাবেশে অংশ নিতে দেয়া যাবে না। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসামিরা মারণাস্ত্র, লাঠি, বন্দুক, টিয়ারশেলসহ সজ্জিত হয়ে গুলশান-১ ও ২, বনানী, বারিধারা ডিওএইচএস ও আমেরিকান দূতাবাসসহ আশপাশের এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও ডিবিসহ ২৮ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান নেয়। সঙ্গে অস্ত্রের মহড়া দেয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সে সময় আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর ও গণহারে গ্রেপ্তার করা হয়।