এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীর সম্ভাব্য সংকেত পাওয়ার আশায় আমাদের সৌরজগতের বাইরের এক নক্ষত্রকে স্ক্যান করছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ নামের ওই তারা ব্যবস্থায় গবেষকরা কিছু খুঁজে পাননি, যদিও এটি তাদের দীর্ঘতম অনুসন্ধান ছিল। তবে গবেষকরা আশা করছেন, তাদের এ কাজ ভবিষ্যতে গিয়ে মানুষকে এলিয়েনের সংকেত খুঁজে দিতে সহায়তা করবে। ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ ঠান্ডা লাল রঙের বামন তারাটির অবস্থান প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে। এর আশপাশে থাকা গ্রহগুলো এলিয়েন খোঁজার আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, এর মধ্যে অনেক গ্রহের পরিবেশই সম্ভবত জীবনধারণে সহায়ক। এলিয়েনের জীবন নির্দেশ করে এমন রেডিও সংকেত খুঁজে পেতে গবেষকরা ‘অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারে’ দিয়ে তারা ব্যবস্থাটিকে টানা ২৮ ঘণ্টা ধরে স্ক্যান করেছেন। এতে তারা ‘প্ল্যানেট-প্ল্যানেট অকালটেশন (পিপিও)’ নামে পরিচিত এক ঘটনার দিকে মনযোগ দিয়েছেন। যখন বিভিন্ন গ্রহ একে অন্যের সামনে দিয়ে চলাফেরা করে, তখন এমনটি ঘটে থাকে। আর গ্রহগুলোর মধ্যে রেডিও সংকেত আদান প্রদান শনাক্ত করার আদর্শ মুহূর্তও এটি। গবেষণা দলটি এমন কোটিরও বেশি সংকেত পেয়েছেন, যার মধ্যে ১১ হাজার সংকেত তাদের বিবেচনায় বিস্তারিত বিশ্লেষণযোগ্য ছিল। আর সেইসব সংকেতের দুই হাজার দুইশ ৬৪টি ঘটেছিল পিপিও’র সময়। তবে এদের কোনোটি ভিনগ্রহের কোনো প্রাণী থেকে আসেনি। এর পরও বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো একদিন এলিয়েন খুঁজে পাওয়া যেতে পারে এমন এক সিস্টেম নিয়ে এটি ভালো এক পরীক্ষা ছিল। আর এর পদ্ধতিটির উন্নয়নের পাশাপাশি কখন এবং কোথায় এমন সংকেত দেখা যেতে পারে, সেক্ষেত্রেও এ গবেষণা সহায়ক হবে। ‘গবেষণায় দেখা গেছে, মহাকাশে নিজেদের পাঠানো সংকেতের মতো একই ধরনের রেডিও সংকেত পাওয়ার খুব কাছাকাছি আমরা,’ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘পেন স্টেট ইউনিভার্সিটি’র স্নাতক শিক্ষার্থী নিক টুসে। এ কাজের বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘এ রেডিও টেকনোসিগনেচার সার্চ ফর ট্র্যাপিস্ট-১ উইদ দ্য অ্যালেন টেলিস্কোপ অ্যারে’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে, যা প্রকাশের অনুমতি পেয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল’-এ।