ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

কলাচাষে সুদিন

কলাচাষে সুদিন

বগুড়া জেলার মাটি দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ হওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদের ক্ষেত্রে ধান আবাদকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। বগুড়ায় কৃষকরা ধান, মাছ ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি কলাচাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। কৃষকরা এখন পুরোনো ধ্যান-ধারণা পাল্টে লাভজনক ফসল হিসেবে কলাচাষের ওপর ঝুঁকে পড়ছেন। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখনো জমির আইলে, পুকুরপাড়ে, বাঁশঝাড়ে অমৃত সাগর, সবরি অনুপম, চাম্পাসহ বিভিন্ন জাতের কলা বাগান করে চাষ করছে কৃষকরা। উঁচুজমি কলা চাষের জন্য উপযোগী। কম খরচে বেশি লাভের আশায় কলাচাষ দিন দিন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর ফলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও এসেছে তাদের। জেলার একাধিক কলা চাষিরা জানান, এক একর জমিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করলে তাদের আবাদি কলা বিক্রি হয়ে থাকে এবং তা থেকে হাজার হাজার টাকা আয় করা যায়। ভাইরাসজনিত রোগবালাই ও মৌসুমি ঝড় কলা গাছের প্রধান শত্রু। তবে এবার কলার ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। একই সঙ্গে দামও গত বারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে জেলার বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, আদমদিঘী, গাবতলী, শেরপুর, ধুনট, সোনাতলা, কাহালু, শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কলার চাষ হচ্ছে। কলা চাষ করে জেলার অনেক কৃষক আজ স্বাবলম্বী। আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের শালগ্রামের বাসিন্দা রহিম জানান, তার বাড়ির পাশে প্রায় দেড় বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছেন। তার কলা বাগান থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার কলা বিক্রি করবে বলে সে আশা প্রকাশ করছেন। জেলা কৃষি অফিসার জানান, পূর্বের তুলনায় বগুড়া জেলায় এখন কলা চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। সরকারিভাবে কৃষি অফিসের মাধ্যমে জনসাধারণকে কলা চাষের পরামর্শও দেয়া হচ্ছে। একই জমিতে কলা চাষের ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদও করা যায়। ফলন বেশী হওয়ায় উত্তরবঙ্গের বৃহৎ হাট বসে মহাস্থান ও মোকামতলায়। উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা সরবরাহ হয়ে থাকে। কলার মৌসুমে প্রতিদিন এখানে প্রায় কোটি টাকার কেনাকাটা হয়। কলা চাষে পর্যাপ্ত রোদ ও আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়। এবারের আবহাওয়া কলার জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় আবাদও ভালো হয়েছে বলে জানায় চাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কলা বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কলা চাষে খরচ কম, ঝুঁকি ও রোগবালাই কম থাকায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কলা চাষে। কলার ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য শাকসবজির চাষ করেও লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন উপজেলার কৃষক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত